ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

৯৬ শতাংশ শিশুশ্রমিক নির্যাতনের শিকার

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৯
৯৬ শতাংশ শিশুশ্রমিক নির্যাতনের শিকার বক্তব্য রাখছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. মুজিবুল হক।

ঢাকা: শিশুশ্রমের নেতিবাচক দিক জানার পরও অধিকাংশ নিয়োগকর্তা শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করেন। তারা শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইন ও নীতিমালাগুলো ঠিকভাবে জানেন না।

সম্প্রতি ট্রান্সপোর্ট ও গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুশ্রম সম্পর্কিত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বেইজলাইন জরিপ থেকে প্রাপ্ত এসব তথ্য ও সুপারিশমালা তুলে ধরা হয়।

চাইল্ড ফান্ড কোরিয়ার আর্থিক সহায়তায় এডুকো দু’বছর মেয়াদী অপশনস ফর ডিগনিটি অফ হিউম্যান বিং বাই ইনফ্লুইনসিং কি অ্যাকটরস টু রিফর্ম (অধিকার) পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর সহযোগী সংগঠন হিসেবে কাজ করছে ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেন (ইএসডিও)।

এই প্রকল্পের আওতায় দু’টি নির্দিষ্ট সেক্টরের ওপর একটি বেইজলাইন জরিপ পরিচালনা করা হয়, যা এই অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা হয়। চাইল্ড প্রোটেকশন স্পেশালিস্ট এবং স্টাডি টিম লিডার শরফুদ্দিন খান জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করেন।  

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. মুজিবুল হক প্রধান অতিথি এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

মুজিবুল হক বলেন, শিশুশ্রম নিরসন করার জন্য আমাদের নিজেদের ঘর থেকে কাজ শুরু করতে হবে। শুধু আইন ও নীতিমালা দিয়ে শিশুশ্রম বন্ধ করা যাবে না, এজন্য নীতি নির্ধারক, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যসহ সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের ইতিবাচক মানসিক পরির্তন প্রয়োজন।

আজিমুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, যদি আমরা আইনি কাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ বৃদ্ধি, অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারি, তাহলে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিশুশ্রম নিরসন করা অবশ্যই সম্ভব।

এডুকোর কান্ট্রি ডিরেক্টর জনি এম সরকার বলেন, সরকার এবং এনজিওগুলোর সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে শিশুশ্রমিকদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।

সরকারের গৃহীত ২৮৪ কোটি টাকার শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্প খুব শিগগিরই শুরু হবে, যা এক লাখ শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম থেকে প্রত্যাহার করতে সহায়ক হবে বলে তিনি আশাবাদী।

গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ৯৬ শতাংশ শিশু গৃহকর্মীদের শারীরিক আঘাতের শিকার হচ্ছে, ৩৫ দশমিক ৫১ শতাংশ মানসিক সমস্যায় ভুগছে, ৬৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ তাদের নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে বকুনির শিকার এবং ১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ জন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। পরিবহনক্ষেত্রে ৬৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ শিশু পরিবহন শ্রমিক প্রায়ই তাদের নিয়োগকর্তা এবং যাত্রীদের কাছ থেকে নির্যাতনের শিকার হয়। ৬৪ দশমিক ০৪ শতাংশ শারীরিক আঘাতের ঝুঁকিতে রয়েছে, ৩৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ হতাশায় ভুগছে।

এছাড়া বেশিরভাগ শ্রমজীবী শিশু এবং তাদের পিতামাতাদের শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইন ও নীতিমালা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তবে, বেশিরভাগ নিয়োগকর্তাদের শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইন ও নীতি সম্পর্কে ধারণা আছে। ৫৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ শিশু গৃহকর্মী কখনও স্কুলে যায়নি এবং ৮২ দশমিক ৬৮ শতাংশ শিশু পরিবহন শ্রমিক কখনও স্কুলে যায়নি। ৮৩ দশমিক ২৭ শতাংশ শিশু গৃহকর্মী এবং ৮৬ দশমিক ১১ শতাংশ শিশু পরিবহন শ্রমিকের সঠিক স্বাস্থ্যসেবার ধারণা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৯
এফএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।