ঢাকা, রবিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পেট্রোল পাম্পে ধর্মঘট দ্বিতীয় দিনে, রাজশাহীতে দুর্ভোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৯
পেট্রোল পাম্পে ধর্মঘট দ্বিতীয় দিনে, রাজশাহীতে দুর্ভোগ

রাজশাহী: রাজশাহীর পেট্রোল পাম্পগুলোয় ধর্মঘট গড়ালো দ্বতীয় দিনে।

সোমবার (০২ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মতো পেট্রলপাম্পগুলো থেকে কোনো জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হচ্ছে না। এতে সড়কগুলোতে প্রথম দিনের তুলনায় আজ যানবাহন চলাচলের সংখ্যা আরও কমে এসেছে।

ফলে দেখা দিয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগ।

ধর্মঘটের কারণে রোববার (০১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজশাহীর কোনো পেট্রোল পাম্প থেকে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হচ্ছে না। জ্বালানি তেল না পাওয়ার কারণে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকরা পড়েছেন বিপাকে। যারা ধর্মঘটের খবরে আগাম জ্বালানি তেল সংগ্রহ করেছিলেন তারাই কেবল এখন মোটরসাইকেল চালাতে পারছেন।

রাজশাহী মহানগরীর শালবাগান এলাকায় থাকা আলম ফিলিং স্টেশনের সেলসম্যান মুরাদ হোসেন জানান, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক রোববার ভোর ৬টা থেকে তারা ধর্মঘটে গেছেন। এই কারণে ফিলিং স্টেশন থেকে আর কাউকে জ্বালানি তেল দেওয়া হচ্ছে না। তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।

এর আগে গত ২৬ নভেম্বর দুপুরে জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন এবং ট্যাংকলরি ভাড়া বাড়ানোসহ ১৫ দফা দাবি ৩০ নভেম্বরের মধ্যে মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান রতন।

রতন বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে ১ ডিসেম্বর থেকে খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সব ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন, পরিবহন ও বিপণন কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হবে।

দাবিগুলো হলো- জ্বালানি তেল বিক্রির প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে সাড়ে ৭ শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট নাকি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান-বিষয়টি সুনির্দিষ্টকরণ, প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরি শ্রমিকদের পাঁচ লাখ টাকা দুর্ঘটনা বিমা প্রথা প্রণয়ন, ট্যাংকলরির ভাড়া বাড়ানো, পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ বাতিল, পেট্রোল পাম্পে অতিরিক্ত পাবলিক টয়লেট, জেনারেল স্টোর ও ক্লিনার নিয়োগের বিধান বাতিল, সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পেট্রোল পাম্পের প্রবেশ দ্বারের ভূমির জন্য ইজারা গ্রহণের প্রথা বাতিল, ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ব্যতিত অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক লাইসেন্স গ্রহণের সিদ্ধান্ত বাতিল, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কর্তৃক আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যাংক পাঁচ বছর অন্তর বাধ্যতামূলক ক্যালিব্রেশনের সিদ্ধান্ত বাতিল, ট্যাংকলরি চলাচলে পুলিশি হয়রানি বন্ধ, সুনির্দিষ্ট দপ্তর ব্যতীত সরকারি অন্যান্য দাপ্তরিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ডিলার বা এজেন্টদের অযথা হয়রানি বন্ধ, নতুন কোনো পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানি তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু, পেট্রোল পাম্পের পাশে যেকোনো স্থাপনা নির্মাণের পূর্বে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ বাধ্যতামূলক ও বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরি থেকে জোরপূর্বক পৌরসভার চাঁদা গ্রহণ বন্ধ করা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উল্লেখিত দাবির বিষয়ে সরকারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও শুধু মৌখিক আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় পেট্রোল পাম্প পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ এ খাতটি এরইমধ্যে অলাভজনক হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়েই তারা চূড়ান্ত কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, একই কর্মসূচির খুলনা এবং রংপুর বিভাগ থেকেও আলাদাভাবে পালন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৯
এসএস/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।