ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

শহীদপুত্র বাবলুর ছেলেকে চাকরি দেবেন মেয়র

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
শহীদপুত্র বাবলুর ছেলেকে চাকরি দেবেন মেয়র আলমগীর হোসেন বাবলু ও খায়রুজ্জামান লিটন।

রাজশাহী: রাজশাহীর শহীদ বুদ্ধিজীবী এমএ সাঈদের দ্বিতীয় পুত্র আলমগীর হোসেন বাবলুর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। চা বিক্রেতা বাবলুর পারিবারে সার্বিক খোঁজ-খবর নিয়েছেন এবং তার এক ছেলেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনে চাকরি দেবেন বলে কথা দিয়েছেন মেয়র। 

সম্প্রতি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে রাজশাহীর শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক এমএ সাঈদের ছেলে চা বিক্রেতা-এই খবর প্রকাশিত হলে বিষয়টি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের নজরে আসে। মেয়রের নির্দেশে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে মেয়রের একান্ত সচিব আলমগীর কবির ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মিশু মহানগরীর মালদা কলোনিতে বাবলুর বাড়িতে যান।

 

এসময় তারা জানান, রাজশাহীর নগরপিতা দাপ্তরিক কাজে ঢাকা রয়েছেন। মেয়র ঢাকা থেকে ফিরে এসে বাবলুর এক ছেলেকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন এবং শহীদ পারিবারের পাশে থাকবেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান আলমগীর হোসেন বাবলু বলেন, বিভিন্ন সময় অনেকেই খোঁজ-খবর নিয়েছেন। কিন্তু কেউ তেমন কিছু করেননি। তবে এবার সিটি মেয়র লোকজন পাঠিয়ে আমাদের খোঁজ-খবর নিয়েছেন এবং আমার এক ছেলেকে চাকরি ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। এতে আমার পরিবারের সবাই খুশি।

জানা যায়, আলমগীর হোসেন বাবলু মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালে ফুটপাতে চা বিক্রি করে সংসার চালান। তার বাবা শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক এমএ সাঈদ দেশ স্বাধীনের সময় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। রাজশাহী আর্ট কাউন্সিল (বর্তমানে পদ্মা মঞ্চ) ও রাজশাহী প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেন তিনি। বেতার প্রতিষ্ঠাকালে সংবাদপাঠক ও অভিনেতাও ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনী তাকে বাড়ি থেকে ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুজ্জোহা হলে নিয়ে যায় ও নির্মমভাবে হত্যা করে।  

বাবলু বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। তখন মহানগরীর ষষ্ঠীতলা এলাকার একটি বাড়িতে থাকতাম আমরা। একদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাড়িতে এসে আমার চোখের সামনেই বাবাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। তখন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার আর কোনো হদিস পেলাম না।  

‘কিছুদিন পর রাজশাহীর শাহ মখদুম ইনস্টিটিউটের পিয়ন কাদের মিয়া এসে জানান, আমার বাবাসহ ১৩ জনকে জোহা হলে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পরে মরদেহগুলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বধ্যভূমিতে ফেলে দেওয়া হয়। সেখানে কাদের মিয়াও ছিলেন। তবে গুলি লাগার আগেই তিনি মাটিতে পড়ে যান ও মারা যাওয়ার ভান করেন। পরে সবাইকে গর্তে ফেলে দেওয়া হয়। পাকিস্তানি সেনারা চলে গেলে মরদেহভর্তি গর্ত থেকে পালিয়ে আসেন কাদের মিয়া। ’

জোহা হলের বধ্যভূমির শহীদদের নামের তালিকায় বাবার নাম রয়েছে বলেও জানান শহীদপুত্র আলমগীর হোসেন বাবলু।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
এসএস/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।