মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় ওই শিক্ষার্থীকে দেখতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দেখতে এসে তিনি এই দাবি জানান।
এর আগে মানবাধিকার কমিশন হাসপাতালে মেয়েটির চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।
পরে হাসপাতাল ত্যাগ করার সময় তিনি বলেন, মেয়েটিকে দেখেছি, তার সঙ্গে কথা হয়েছে। মেয়েটি জানিয়েছেন আসামিকে দেখলে চিনতে পারবেন। আসামি দেখতে মাঝারি গঠন এবং বাকি সবকিছুই কেমন দেখতে সবকিছু তা বলতে পারবেন। অভিজ্ঞ চিত্রশিল্পীর মাধ্যমে আসামির ছবি আঁকিয়ে তাকে শনাক্ত করা হবে। মেয়েটি অত্যন্ত বুদ্ধিমান তাই ধর্ষণের আলামত নষ্ট হতে দেয়নি। তার ডিএনএ টেস্ট করার জন্য আলামতগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। আশা করি, ছবি আঁকিয়ে এবং ভিকটিম ও আসামির ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করতে অসুবিধা হবে না।
মানবাধিকার কমিশন বলেন, আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। মেয়েরা কি এতই সহজ যে, শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই যৌন সহিংসতার শিকার হবে। এখানে ওসিসিতে পুলিশ, ডাক্তার ও অ্যাডভোকেট আছেন, মেয়েটিকে সব ধরনের সহায়তা করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। এখানে মেয়েটির ছাড়াও আরও ভিকটিম রয়েছে। তাদের সবার মামলার মনিটরিং এবং এর বিচার, আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে মনিটরিং করবো।
মানবাধিকার কমিশন বলেন, ডিএনএ ল্যাবটি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত। এটি অধিদফতর গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। ডিএনএ আইনে স্পষ্ট বলা আছে আমাদের সবার ডাটাবেস থাকবে সেখানে। ডিএনএ অধিদফতর গঠনের বিষয়টি সচিব কমিটির মাধ্যমে পেন্ডিং আছে। আশা করি, দ্রুত এটি গঠন এবং ন্যাশনাল ডাটাবেজ গঠন হবে। যেখানে আপনার আমার সবার ডিএনএ প্রোফাইল থাকবে। যদি সবার ডিএনএ ডাটাবেজ থাকতো তাহলে এই মেয়েটির কাছ থেকে যে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে তার মাধ্যমেই ইতোমধ্যে আসামি শনাক্ত করা যেত। এজন্য আমরা মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সরকারের কাছে আশা করবো দ্রুত যেন এটি গঠন করে। এই ঘটনাটি অবশ্যই মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। আমরা শুধু নিন্দা ও উদ্বেগ জানাবো এটিই শেষ না। এটির নিরসন হওয়া উচিত। নারী-পুরুষ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে যাতে এ ঘটনা বন্ধ হয়।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড মেয়েটিকে দেখেছে, তারা এটির ফিজিক্যাল কন্ডিশনের ট্রমা বিশেষ কিছু পায়নি। মেয়েটি মানসিকভাবে শক্ত আছেন। সার্বিকভাবে গত সোমবারের চাইতে আজকে আরেকটু স্বাভাবিকের দিকে আগাচ্ছে। আশা করি, দু-একদিনের মধ্যে তাকে ছেড়ে দিতে পারবো। তার কন্ডিশন ইম্প্রুভ করছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে শেওড়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুর্মিটোলায় বাস থেকে নামার পর অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি মুখ চেপে তাকে পাশের একটি স্থানে নিয়ে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করে। পরে রাত ১০টার দিকে সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নিজ গন্তব্যে পৌঁছালে রাত ১২টার পর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে ওসিসিতে ভর্তি করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২০
এজেডএস/এএটি