ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশাল এসপির বিরুদ্ধে রেস্তোরাঁ মালিকের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২০
বরিশাল এসপির বিরুদ্ধে রেস্তোরাঁ মালিকের সংবাদ সম্মেলন সংবাদ সম্মেলনে রেস্তোরাঁ মালিক বাপ্পী রঞ্জন রায়। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশাল জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি)  বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন নগরের রেস্তোরাঁ মালিক বাপ্পী রঞ্জন রায়।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে জেলার পুলিশ লাইন্স রোডের দ্য রিভার ক্যাফে চাইনিজ রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।  

লিখিত বক্তব্যে বাপ্পী বলেন, ‘আমার মালিকানাধীন দ্য রিভার ক্যাফে রেস্টুরেন্টের ভবনের জমির মালিক জেলা পুলিশ হলেও রেস্টুরেন্ট ভবন ও যাবতীয় ডেকোরেশন আমার নিজ অর্থ ব্যয়ে করা।

এ জমির ওপর আমার নিজ অর্থে ক্যাফেটেরিয়া ডেকোরেশন, ফিনিসিং এর কাজ সম্পন্ন করি। কাজটি ২০০৭ সালে শুরু হয়ে ২০০৮ শেষ হয়।  

তিনি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় আমি (বাপ্পীরঞ্জন রায়) জেলা পুলিশের রেস্টুরেন্ট  ভাড়া নেওয়ার জন্য আগ্রহী হলে পুলিশ সুপারের (এসপি) সঙ্গে ২০০৮ সালের ২৭ মার্চ আমার চুক্তি সই হয়। যার মেয়াদ ছিল ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এ চুক্তি ২০১১ সালে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয় এবং পরবর্তীতে চুক্তিটি ২০২৮ সাল পর্যন্ত বলবৎ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।  

চুক্তির ১৭ দফায় উল্লেখ করা হয়, চুক্তির মেয়াদের মধ্যে পুলিশ সুপার আমার ব্যবসার কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারবে না। যদি করে তাহলে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবেন। আমি নিজ তহবিল থেকে কয়েক লাখ টাকা এ প্রতিষ্ঠানে ব্যয় করেছি। এমনকি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে আমার প্রতিষ্ঠানের পাওনা রয়েছে। এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর প্রায় ১০০ জন জীবিকা নির্বাহ করে।  

এদিকে ডিআইজি বরিশাল রেঞ্জ ২০১৫ সালের ৫১৭৭ নম্বর স্মারকের অনুবলে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স ২০১৬ সালের ৪৬৭১ নম্বর স্মারকে আমার সঙ্গে পুলিশ সুপারের চুক্তি বাতিল করেন। পুলিশ সুপার চুক্তি বাতিলের চিঠি আমার কাছে পাঠান। পরবর্তীতে আমি উল্লেখিত স্মারক চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন ১৪৯৭/২০১৬ দায়ের করলে হাইকোর্ট চুক্তিপত্র বাতিলের আদেশ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। যা পর্যায়ক্রমে এখনো বলবৎ রয়েছে। আদালত থেকে স্থগিতাদেশ বহাল থাকা অবস্থায় পুলিশ সুপারের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ২০১৯ সালে ৭৪৩২ নম্বর স্মারকের মাধ্যমে ক্যাফেটরিয়ার পেছনের অংশ জরুরি ভিত্তিতে অপসারণ করার জন্য আমাকে চিঠি দেয়। কিন্তু স্থগিতাদেশ বহাল থাকা অবস্থায় এমন চিঠি আমাকে পাঠাতে পারে না।

বাপ্পী আরও বলেন, ‘চুক্তিপত্রের মেয়াদ অনুযায়ী পানির লাইন ও বিদ্যুৎ সংযোগ পুলিশ সুপার আমাকে দিতে বাধ্য। কিন্তু পুলিশ সুপার পানির লাইন বন্ধ করার জন্য এবং ভাড়াটিয়া আঙ্গিনাটি পেছনের অংশ ভাঙা ও অপসারণ করার পায়তারায় লিপ্ত আছেন। বিধায় আমি বাধ্য হয়ে বরিশাল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। এ মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আমার পানির লাইন বন্ধ করা হয়েছে। ফলে আমার ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমি পুলিশ সুপারের ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার বলে অভিযোগ করেন বাপ্পী।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, পুলিশ লাইনে ১০তলা একটি ব্যারাক হাউস নির্মাণ করা হবে। যার জন্য ইতোমধ্যে পুলিশ লাইন্সের ক্যান্টিন ভেঙে ফেলা হয়েছে। রিভার ক্যাফের রান্না ঘরের একটি অংশ নির্মাণাধীন ১০তলা ভবনের জায়গার মধ্যে পড়েছে। তাই তাদের রান্না ঘর সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছিলো। কিন্তু তারা এটিকে নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি বলছেন তাদের পানির লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আসলে পানির লাইন বন্ধ করা হয়নি, যেহেতু ক্যান্টিন ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং ক্যান্টিনের নিচে পানির লাইন থাকার কারণে পুলিশ লাইনেও পানি সরবরাহ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে রেস্তোরাঁর মালিক বাপ্পী রঞ্জন রায়ের আইনজীবী শেখ আব্দুল্লাহ নাসির উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২০
এমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।