ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে বছরে ৫০০ কোটি টাকা পাচার’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২০
‘বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে বছরে ৫০০ কোটি টাকা পাচার’

ঢাকা: বিদেশি সফটওয়্যারের চেয়ে দেশীয় সফটওয়্যার অনেক নিরাপদ বলে মন্তব্য করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। 

তারা বলছেন, বিদেশি পণ্য হলে ভালো, আর দেশীয় হলে খারাপ- এ মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশি সফটওয়্যার বিশ্বমানের, তাই দেশীয় সফটওয়্যার ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে।

বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারে বছরে ৫০০ কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। তাই দেশীয় সফটওয়্যার ব্যবহার করে দেশের টাকা দেশেই রাখা উচিত।  

শনিবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের মিলনায়তনে কালের কণ্ঠ-সিটিও ফোরাম আয়োজিত ‘দেশীয় কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার শিল্পের উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ কথা বলেন।  

কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।  

আলোচনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কায়কোবাদ বলেন, কোর ব্যাংকিংয়ে বিদেশি সফটওয়্যার বাবদ বছরে ৫০০ কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। সেই টাকা দিয়ে ১০ জনের কর্মসংস্থান হয়। বিদেশি জিনিস পেলেই আমরা পাগল হয়ে যাই। দেশি পণ্য ব্যবহার করবো, দেশের টাকা দেশে রাখবো এমন মনোভাব হওয়া উচিত।  

সীমান্ত ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, আশির দশকে যখন বেসরকারি ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হয় তখন ম্যানুয়েল পদ্ধতি ছিল, ক্যাশ ও হিসাব মিলিয়ে বাসায় যেতে রাত ১২টা বেজে যেত। কিন্তু যখন অনলাইনে কোর ব্যাংকিং পদ্ধতি চালু হলো তখন আমুল পরিবর্তন এসেছে। আমাদের মানসিক পরিবর্তন দরকার। আমরা বাঙালি বিদেশি পণ্যে বিশ্বাস করি, এ মানসিকতার পরিবর্তন দরকার।  

‘বাংলাদেশি সফটওয়্যার অত্যন্ত নিরাপদ। সেটা যদি আমরা ব্যবহার না করি, তাহলে বুঝতে পারবো না। বিদেশি হলে ভালো হবে, দেশি হলে খারাপ হবে, এ মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ’ 

স্বাগত বক্তব্যে কালের কণ্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ এখন সফটওয়্যার রপ্তানি করছে, এটা স্বপ্নের মতো। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন সোনার বাংলার। সোনার বাংলার বর্তমান রূপই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ।  

‘সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। ’

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সফটওয়্যার রপ্তানিতে ব্যাপকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এক সময় সফটওয়্যার রপ্তানিতে ভারতের আধিপত্য ছিল, কিন্তু বাংলাদেশ এখন সফটওয়্যার রপ্তানিতে ভারতকে টেক্কা দিচ্ছে।  

মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) পরিচালক ও ফ্লোরা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক  মোস্তফা রফিকুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকিং, আগামীর ব্যাংকিং। এক্ষেত্রে দেশীয় সফটওয়্যারের ব্যবহার করা উচিত।  

গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন- সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তপন কান্তি সরকার, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী,   
অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালক কেএম মঞ্জুরুল হক ও কেএম রহমতুল্লাহ প্রমুখ।  

গোলটেবিল বৈঠকে সফটওয়্যার খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে ২৫টি ব্যাংক বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহার করে। আর ৩১টি ব্যাংক দেশি সফটওয়্যার ব্যবহার করে। জনতা, সোনালী, অগ্রণী, রূপালীসহ ছয়টি সরকারি ব্যাংকই বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহার করছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২০
টিএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।