এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন আহত দুই সাংবাদিকসহ বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
অপরদিকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে শনিবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাতে পুলিশের পিটুনিতে আহত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ করেন আহত দুই সাংবাদিক। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ব্রিজের ঢালে ঘটে এ ঘটনা।
আহতরা হলেন, বরিশালের আঞ্চলিক দৈনিক দেশ জনপদ পত্রিকার ফটোসাংবাদিক সাফিন আহমেদ রাতুল ও দৈনিক দখিনের মুখ পত্রিকার ফটো সাংবাদিক নাছির উদ্দিন।
সাফিন আহমেদ রাতুল জানান, পুলিশের পিটুনিতে তারা হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং লোক লজ্জায় প্রথমে বিষয়টি গোপন করেছিলেন। কিন্তু এক পর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে শনিবার সন্ধ্যায় সহকর্মীদের বিষয়টি খুলে বলেন তারা।
রাতুল আরো জানান, করোনায় ঘর থেকে বের না হওয়া বিষয়ক একটি প্রচারণা চালাতে যাবেন বরিশাল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন। এ খবরে সংগ্রহ করতে গিয়ে বিলম্ব হওয়ার কারণে তা না পেয়ে আবার শহরের দিকে ফিরছিলাম। ফেরার পথে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেনের গাড়ির পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন পুলিশ সদস্য আমার ও নাছিরকে বহনকারী মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এবং লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও তারা লাঠি দিয়ে পেটায়।
রাতুল জানান, ঘটনার সময় তারা নিয়মানুযায়ী মাস্ক পরিহিত অবস্থায় ছিলেন এবং সঙ্গে ক্যামেরাও ছিল। আর যে পুলিশ সদস্যরা পেটায় তারাও মাস্ক পরিহিত ছিল এবং নেইমপ্লেটও ছিল না, তাই কাউকে চিনতেও পারিনি।
এদিকে পিটুনিতে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্খান ফুলে গেছে এবং ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নিন্দা জানিয়েছেন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তিনিও ঘটনাটি আহত ফটোসাংবাদিক রাতুলের কাছ থেকে শুনেছেন। এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে দুঃখও প্রকাশ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও সম্মানের জন্য সম্ভব সব কিছু করা হবে। আমার অফিসারের অবহেলা থাকলে তার শাস্তি হবে, অন্যকেউ করলেও আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে।
অপরদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান সাংবাদিকদের জানান, সংকটময় পরিস্থিতিতে সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার নির্দেশনা রয়েছে পুলিশের প্রতি। এরপরও সাংবাদিকের সঙ্গে অসদাচরণ করে থাকলে, যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার আশ্বাস দেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় : ০০৪৮ ঘন্টা, মার্চ ২৯, ২০২০
এমএস/এমএইচএম