নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় ছয়টি এসি। এসময় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎসংযোগ, নিভে যায় বাতি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর বিদ্যুৎ চলে যায়। প্রথমে ট্রান্সফরমারের আওয়াজ হয়, পরে মুহূর্তের মধ্যে মসজিদের এসিগুলোর বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তেই মসজিদের ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময়ে মসজিদে থাকা প্রায় ৪০ জন মুসল্লির গায়ে আগুনের ফুলকি গিয়ে পড়লে একে একে দগ্ধ হতে থাকেন তারা। তখন দগ্ধ মুসল্লিরা একে একে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে করতে মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসতে থাকেন। তাদের চিৎকারে সেখানে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তাদের বেশিরভাগেরই পরনের পোশাক পুড়ে গেছে। মসজিদের ভেতরে গিয়ে দেখা যায় মেঝেতে একজনের ওপর আরেকজন পড়ে আছেন। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা মানুষগুলোর অনেকের শরীর থেকেই রক্ত ঝরছিল। অনেক জ্বালা-পোড়া কমাতে মেঝেতেই গড়াগড়ি করছিলেন। ঘটনার পর বাইরে থেকে লোকজন পানি নিয়ে মসজিদের মেঝেতে পড়ে থাকা মুসল্লিদের গায়ে ছিটিয়ে দেন। তাতে রক্ত পানিতে মিশে লাল হয়ে যায় মেঝে। দগ্ধদের দ্রুত রিকশায় করে নেওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে (তল্লা সবুজবাগ জামে মসজিদ নামেও পরিচিত) এ ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দগ্ধ ইমাম, মুয়াজ্জিন, ফটো সাংবাদিক, জেলা প্রশাসনের একজন কর্মচারীসহ ৩৭ জনের মধ্যে ৩৬ জন জাতীয় শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। তাদের বেশিরভাগেরই শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে। আর একটি শিশু ওই ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।
স্থানীয় ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জমসের আলী ঝন্টু জানান, ভেতর থেকে কেউ পোশাক পড়ে বের হতে পারেননি। আগুনে সবার পোশাক পুড়ে গেছে। রক্তাক্তভাবে বের হয়েছেন অনেকেই। বেশিরভাগেরই শরীরের চামড়া সাদা হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বিস্ফোরণে মসজিদের জানালার গ্লাসগুলো ভেঙে গেছে। চেয়ার ও ফ্যান বাকা হয়ে গেছে। ভেতরে থাকা দেড় ও দুই টন করে ছয়টি এসির সবগুলো বিস্ফোরিত হওয়ায় সেগুলোর ভেতরের যন্ত্রাংশ বেরিয়ে গেছে। বিস্ফোরণে মসজিদের ভেতর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২০
এসআই