ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

৩ মাস বেতন-ভাতা পাননি চিনি কল শ্রমিকরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
৩ মাস বেতন-ভাতা পাননি চিনি কল শ্রমিকরা

রাজশাহী: শত শত মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত পড়ে থাকায় তিন মাস ধরে বেতন-ভাতা পাননি রাজশাহী চিনি কলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা। অর্থাভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

 

রাজশাহী চিনি কল সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালের পর থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ লোকসান গুণতে থাকা রাজশাহী সুগার মিলে কয়েকবছর চিনির উৎপাদন কমতে থাকলেও পর্যায়ক্রমে আবার তা বেড়ে ছিল। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এক লাখ ২৯ হাজার ২৫১ মেট্রিক আখ মাড়াই থেকে চিনি উৎপাদন হয়েছে সাড়ে আট হাজার মেট্রিক টন। আগামী অর্থবছরে এক লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।  

চিনি উৎপাদনে প্রতি কেজিতে ১০৮ টাকা খরচ হলেও তা সরকার নির্ধারিত বিক্রয়মূল্যে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছিলো। তারপরও বাজারে চিনির দাম কমে যাওয়ায় রাজশাহী সুগার মিলের গুদামে চার মাস ধরে দুই হাজার ১৬৬ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যার বাজার মূল্য ১৩ কোটি টাকা। এ বিপুল পরিমাণ চিনি অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে থাকায় রাজশাহী সুগার মিলের ৭২১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকের তিন মাস ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে।

চিনি কল শ্রমিক ও কর্মচারীদের অভিযোগ, সুগার ক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউট কৃষকদের ভালো মানের আখের জাত সরবরাহ না করায় আখ থেকে চিনি উৎপাদনের হার কমে গেছে। আগে যেখানে আখ থেকে চিনি উৎপাদনের হার আট থেকে নয় শতাংশ ছিল সেটা অনেক কমে চলতি বছর ছয় দশমিক ২১ শতাংশে দাঁড়িছে। এছাড়া বাজারের চেয়ে সরকার নির্ধারিত চিনির দাম বেশি হওয়ায়ও চিনির দাম কমে গেছে। বাজারে যেখানে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৭ টাকা কেজি দরে সেখানে সরকার নির্ধারিত চিনির মূল্য ৬০ টাকা কেজি দরে।

রাজশাহী চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মজিবর রহমান বলেন, আমরা আতঙ্কিত। এমনিতে তিন মাসের বেতন বন্ধ থাকায় আমরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। অব্যাহত লোকসানের কারণে কল বন্ধ করে দেওয়ার আশঙ্কা করছি। এমনটা হলে আমাদের পথে বসতে হবে।  

চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রহিদুল ইসলাম বলেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণেই চিনিকলগুলো মার খাচ্ছে। যখন চিনির দাম বাজারে বেশি তখন চিনিগুলো ছাড়া হয় না। বাজার বড় বড় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। তারা কম দামে বিদেশি চিনি আমদানি করে কম দামে বাজারে ছেড়ে দেয়। সেসব চিনি স্বাস্থ্যসম্মতও না। আর আখ থেকে মাড়াই করা চিনি পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত। দেশের চিনি কলগুলোতে উৎপাদিত চিনি মানসম্মত হওয়ার পরও দাম বেশি হওয়ায় মার খাচ্ছে।

জানতে চাইলে রাজশাহী চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহা. আব্দুস সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, চিনি বিক্রি করে বেতন পরিশোধের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে। আমরা বেতন পরিশোধের চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
এসএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।