ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

স্বাস্থ্য ডিজির দুঃখপ্রকাশেই শেষ, রামেকে এখনও সাংবাদিক ঢোকা নিষেধ!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২০
স্বাস্থ্য ডিজির দুঃখপ্রকাশেই শেষ, রামেকে এখনও সাংবাদিক ঢোকা নিষেধ! রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

রাজশাহী: বিগত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তাই পেশাগত দায়িত্ব পালনে হাসপাতালে সাংবাদিকরা ঢুকতে পারেন না।

 

দীর্ঘ সময় ধরে সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে এলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। এমনকি খোদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রফেসর এ বি এম খুরশীদ আলম নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করলেও তা এখনও বহাল রয়েছে।  

সম্প্রতি রামেক হাসপাতাল পরিদর্শনে যান স্বাস্থ্যের ডিজি। পরে সেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার না থাকার কথা জানতে পেরে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এজন্য দুঃখপ্রকাশ করেন এবং ক্ষমাও চান। তিনি রামেক হাসপাতাল পরিচালককে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে অনুরোধ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।

২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজনকে একদল ইন্টার্ন পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এসময় সাংবাদিকরা ওই স্বজনের ছবি তুলতে গেলে ইন্টার্নরা দল বেঁধে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০ সাংবাদিক আহত হন। এরপর থেকে কয়েকবার নোটিশ ঝুলিয়ে রামেক হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কর্তৃপক্ষ।  

চলতি বছরের ২৩ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এ বি এম খুরশীদ আলম রামেক হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। এসময় সাংবাদিকরা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানালে তিনি দুঃখপ্রকাশ করেন।  

এসময় খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, এখানে পাঁচ বছর ধরে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হয় না- এ অভিযোগ শুনলাম। এজন্য যদি আমি দায়ী হয়ে থাকি তাহলে আপনাদের কাছে আমি দুঃখিত ও ক্ষমা চাই।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি হাসপাতালের পরিচালককে অনুরোধ করবো আপনি মিডিয়ার সঙ্গে থাকেন। তাদের কাজ করতে সহযোগিতা করেন। আপনাকে অনুরোধ করে গেলাম, পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

কিন্তু স্বাস্থ্যের ডিজিকে পাত্তাই দিচ্ছে না রামেক কর্তৃপক্ষ। এখনও বহাল রাখা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। সবশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলীকে মারধর করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। সে খবর সংগ্রহ করতে গেলে কর্তৃপক্ষের বাধার মুখে হাসপাতালে ঢুকতে পারেনি সাংবাদকর্মীরা।  

সাংবাদিক নেতারা বলছেন, বর্তমানে অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে হাসপাতালটি। হাসপাতালের অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ একটি মহল। হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নেপথ্যে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মামুন-অর-রশিদ বলেন, স্বাস্থ্যের ডিজির কাছে দাবি জানানোর আগে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে হাসপাতালে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। আমরা মনে করি গণমাধ্যম যাতে হাসপাতালে অনিয়ম দুর্নীতির খবর প্রকাশ করতে না পারে সেজন্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।

রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি এখনও সমাধান হয়নি। তাই এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২০
এসএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।