ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কালীগঞ্জে কিশোরীকে গণধর্ষণ, জরিমানার টাকাও মাতব্বরদের পকেটে! 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২০
কালীগঞ্জে কিশোরীকে গণধর্ষণ, জরিমানার টাকাও মাতব্বরদের পকেটে! 

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় ট্রেনের এক কিশোরী যাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠকে অভিযুক্তদের যে জরিমানা করা হয়েছিল, সে টাকাও গেছে মাতব্বরদের পকেটে।

শুক্রবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে কালীগঞ্জ প্রেসক্লাব এলাকা থেকে ভুক্তোভোগী কিশোরীকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেয় কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।  

পুলিশ ও ভুক্তোভোগী কিশোরী জানায়, গত সোমবার(৫ অক্টোবর) রংপুরের কাউনিয়া এলাকার মামার বাড়ি থেকে বাবার সঙ্গে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে খালার বাড়িতে বেড়াতে আসে এক কিশোরী (১৫)। সেখান থেকে পরদিন সন্ধ্যায় লালমনিরহাটগামী আন্তঃনগর করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনে কাউনিয়ার উদ্দেশে রওনা হয় সে। ট্রেন কালীগঞ্জের কাকিনা স্টেশনে দাঁড়ালে ওই কিশোরী নাস্তা করতে নেমে পড়ে। এ সময় কাকিনা স্টেশনে নিজেকে রকি পরিচয় দিয়ে এক ছেলে জানতে চাইলে ওই কিশোরী কাউনিয়া যাচ্ছে বলে জানায়। তথন রকিও নিজেকে কাউনিয়ার বাসিন্দা বলে পরিচয় দেয়। এরই মধ্যে ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেলে রকি অটোরিকশায় করে কাউনিয়া যাবেন এবং সেই অটোরিকশায় তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক একটি অটোরিকশায় রকি ওই কিশোরীকে নিয়ে কাউনিয়া যাওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মধ্যরাতে একটি সেচ পাম্পের নির্জন ঘরে নিয়ে যান। সেখানে রকি ও তা তিন বন্ধু মিলে পালাক্রমে কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। পরদিন বুধবার (৭ অক্টোবর) সকালে মুখ না খোলার শর্তে কিশোরীকে মুক্তি দেন চার যুবক। পরে অসুস্থ কিশোরী পথ ভুলে চলার পথে স্থানীয়রা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মেয়েটি বিষয়টি খুলে বলে। তারপর স্থানীয়দের সহায়তায় এক গ্রাম পুলিশ সদস্যের বাড়িতে আশ্রয় নেয় মেয়েটি। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মাতব্বররা বৈঠকে বসে ধর্ষণকারী যুবকদের শনাক্ত করে মোটা অংকের টাকা জরিমানা আদায় করেন। তবে কিশোরীর অভিযোগ, সে টাকা ওই কিশোরীকে না দিয়ে নিজেদের পকেটেই রাখেন তারা।  

জরিমানার টাকা কিশোরীকে না দিয়ে উল্টো তাকে হুমকি ধমকি দিয়ে পথ খরচ দুই হাজার টাকা দিয়ে মাতব্বররা তাকে পাঠিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেন মেয়েটি। পরে শুক্রবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে স্থানীয়দের মাধ্যমে কিশোরী কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবে আশ্রয় নেয়। প্রেসক্লাবে ঘটনার লোমহর্ষক এ বর্ণনা শুনে সাংবাদিকরা থানা পুলিশকে অবগত করলে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেয়।  

শুক্রবার সন্ধ্যায় কালীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) ফরহাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, মেয়েটির দেওয়া তথ্যমতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। একই সঙ্গে অভিযুক্তদের প্রকৃত পরিচয় প্রায় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে।  

বাংলাদেশ সময়ধ: ২২১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৯, ২০২০
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।