নোয়াখালী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় রিমান্ড শেষে প্রধান আসামি বাদল ও ৫ নম্বর আসামি সাজু আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তবে মামলার ৯ নম্বর আসামি রহমত উল্লাহকে রিমান্ড শেষে আদালতে তোলা হলে জবানবন্দি না দেওয়ায় তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল।
এর আগে শনিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আসামি মাঈনুদ্দিন সাহেদ ও শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) সোহাগ ও রাসেল নামে দুই আসামি এবং বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) আসামি আবদুর রহিম এবং একলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হোসেন সোহাগ আদালতে জবানবন্দি দেন।
পিপি গুলজার আহমেদ জুয়েল বলেন, সিনিয়র চিপ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাশফিকুল হকের খাসকামরায় প্রধান আসামি বাদল ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবনীতা গুহের খাসকামরায় ৫ নম্বর আসামি সাজু ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিন সকাল ১০টার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একলাশপুর ইউনিয়নের ওই গ্রামে নির্যাতনের শিকার নারীর বাড়ি থেকে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করে পিবিআই’র একটি দল।
পরে স্থানীয় লোকজনকে স্বাক্ষী করে আলামতগুলোর জব্দ তালিকা প্রস্তুতের পর জেলা পিবিআই’র কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নারীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী উপস্থিত ছিলেন।
এনিয়ে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মোট সাত আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এর মধ্যে প্রধান আসামি বাদল, আবদুর রহিম মামলার ২ নম্বর আসামি। অন্য চার আসামি সাজু, ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ, রাসেল, সাহেদ ও সোহাগের নাম মামলার এজাহারে না থাকলেও তদন্তে তাদের যুক্ত করা হয়। মামলায় গ্রেফতার ১১ আসামির মধ্যে তিনজনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ঘরে ঢুকে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং সে দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় কয়েকজন বখাটে। এরপর ওই নারী ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের কিছুদিন বাড়িতে নজরবন্দি করে রাখেন তারা। একপর্যায়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় ওই পরিবার। ঘটনার ৩২ দিন পর রোববার (৪ অক্টোবর) সে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ পেলে তা ভাইরাল হয়। এরপর বিষয়টি নজরে এলে রোববার রাতেই নির্যাতিত নারীকে উদ্ধার করে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয় পুলিশ। ওই রাতেই ভুক্তভোগী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দু’টি মামলা দায়ের করেন। দুই মামলার এজাহারে নয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও সাত-আটজনকে আসামি করা হয়। দুই মামলায় এ পর্যন্ত মূলহোতা দেলোয়ারসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত ছয়জন রয়েছেন। পুলিশি তদন্তে এ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসায় দেলোয়ারসহ বাকি পাঁচজনকে এ দুই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
* বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতন: আলামত সংগ্রহ করল পিবিআই
* বেগমগঞ্জে গৃহবধূ নির্যাতন: আদালতে সাহেদের স্বীকারোক্তি
* তিন আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদশর্ন করলেন পিবিআই কর্মকর্তারা
* বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতন: আরও ২ আসামির দোষ স্বীকার
* বেগমগঞ্জে গৃহবধূ নির্যাতন মামলা পিবিআইতে
* বেগমগঞ্জে গৃহবধূ নির্যাতন: ধর্ষক কালাম গ্রেফতার
* বেগমগঞ্জে গৃহবধূ নির্যাতন: আরো ৩ আসামি ৮ দিনের রিমান্ডে
* বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতন: দেলোয়ার-কালামের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা
* নারী নির্যাতন: দেলোয়ারের আরো দুই সহযোগী গ্রেফতার
* নারী নির্যাতনের ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ২ আসামি রিমান্ডে
* নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন: ইউপি সদস্যসহ আরও ২ জন গ্রেফতার
* গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন মামলার প্রধান আসামিকে থানায় হস্তান্তর
* বিবস্ত্র করে নির্যাতন: দুই আসামি ছয় দিনের রিমান্ডে
* গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, আটক ২
* গৃহবধূকে গণধর্ষণের পর বিবস্ত্র করে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২০
এসআরএস
