ভোলা: ভোলায় হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলছে ঘটনা। গত এক বছরে জেলায় ১৮টি খুন ও ৯২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
ধর্ষণ ও হত্যা মামলার ঘটনায় পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার ও চার্জশিট দাখিল করেছে। কিছু মামলা তদন্তনাধীনও রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা তুলনামূলক কম বলে মনে করে পুলিশ।
সূত্র জানায়, গত এক বছরের জেলায় ১৪৫টি ধর্ষণ ও ৩০টি মার্ডারের ঘটনা ঘটেছিল। সেই তুলনায় হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা কিছুটা কম। চলতি বছরে হত্যা ও ধর্ষণ মামলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে অক্টোবর মাসে। এ মাসে ১২টি ধর্ষণ ও দুইটি হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া জানুয়ারি মাসে ১০ ধর্ষণ ও একটি খুন, ফেব্রুয়ারি মাসে ১০ ধর্ষণ ও এক খুন, মার্চ মাসে নয়টি ধর্ষণ ও একটি মার্ডার, এপ্রিল মাসে ৮ ধর্ষণ ও ২ খুন, মে মাসে খুন না হলেও ছয়টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
জুলাই মাসে ছয়টি ধর্ষণ ও ৪টি মার্ডার, আগস্ট মাসে নয়টি ধর্ষণ ও দুইটি খুন, সেপ্টেম্বর মাসে ৭ ধর্ষণ ও ২ মার্ডার, অক্টোবর মাসে ১২ ধর্ষণ ও ২ মার্ডার এবং নভেম্বর মাসে একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং ডিসেম্বর মাসে সাতটি ধর্ষণ ও একটি মার্ডারের ঘটনা ঘটেছে।
চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে ২০ জুন ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়। কলেজছাত্র সুমনকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখে হত্যাকারীরা। পরে পুলিশ ২ দিনপর মাটির নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সঙ্গে জড়িত মিঠুসহ সব আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন রাতে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এক তরুণীকে গণধর্ষণ করেন প্রেমিকসহ ৫ যুবক। চরফ্যাশন উপজেলার কুকরী-মুকরী সংলগ্ন নদীতে ট্রলারের মধ্যে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ৫ ধর্ষককে আটক করে।
২১ জুন রাতে ভোলা সদরের উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে প্রবীর নামের এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ঘটনায় পুলিশ প্রধান আসামিসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে।
চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ভোলার চলফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ এলাকায়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে দুই সন্তানের এক জননীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় নাঈম নামের এক ব্যক্তি। এ সময় ওই নারী নাঈমের পুরুষাঙ্গ কেটে দেয় গৃহবধূ। এ ঘটনায় থানায় শশীভূষণ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
ভোলার মেঘনায় জালপাতাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপ জেলের সংঘর্ষে বাশেদ নামে এক জেলে নিহত হন। ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাসেদ ও ফজলু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বাশেদ নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়। এর দুইদিন পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিলো। এ ঘটনায় পুলিশ রাকিব ও ফজলু নামের দুই জেলেকে গ্রেফতার আদালতে পাঠানো হয়।
ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সার বাংলানিউজকে বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর হত্যা এবং ধর্ষণের ঘটনা খুব কম কম। তারপরেও যেসব হত্যা এবং ধর্ষণ হয়েছে তার বেশিরভাগ ঘটনার তদন্ত করে পুলিশ প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার করেছে। কিছু কিছু মার্ডার ও ধর্ষণ ঘটনার চার্জশিট দাখিল করা হয়।
জানতে চাইলে ভোলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে জানান, নিয়মিত নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা পরিচালনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। বিচারপ্রার্থীরা যাতে ন্যায় বিচার পায় সেই লক্ষে আমরা কাজ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
এনটি