সিলেট: বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে অন এরাইভাল ভিসা সিস্টেম রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা দুই দেশের মধ্যে পর্যটন ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে পারি বলে জানিয়েছেন নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. বনশিধর মিশ্রা।
তিনি বলেন, নেপালে ফলমূল এবং শাক-সবজির দাম বাংলাদেশ থেকে তুলনামূলকভাবে কম। বাংলাদেশি আমদানিরকারা নেপাল থেকে ফলমূল ও শাক-সবজি আমদানি করতে পারেন।
বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) সিলেট চেম্বার অব কমার্স কনফারেন্স কক্ষে চেম্বারসহ ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শিগগিরই বাংলাদেশ-নেপাল চেম্বার অব কমার্স গঠিত হতে যাচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশ ও নেপালের প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ীগণ অন্তর্ভুক্ত থাকবেন বলে চেম্বার অব কমার্স গঠনের মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্য ও শিল্প উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নেপালের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের প্রতিবেশী বন্ধু নেপাল। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নেপালে রাজতন্ত্র বিদ্যমান ছিল। ২০০৮ সাল থেকে নেপাল প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জনতার দূর্বার প্রতিরোধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ নেপালের গণতন্ত্রকামী মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে।
তিনি আরও বলেন, নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যবর্তী সর্বনিম্ন দূরত্ব মাত্র ৩৭ কিলোমিটার। কিন্তু তা স্বত্ত্বেও নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আশানুরূপ নয়। তার কারণ ট্যারিফ সংক্রান্ত কিছু জটিলতা রয়েছে। আমরা এই সমস্যাগুলো নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। এ লক্ষ্যে আগামী অক্টোবর মাসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে নেপালের রেল যোগাযোগ স্থাপন করা গেলে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।
সভায় বক্তাগণ সিলেটের শিল্প, কৃষি, পর্যটন ও শিক্ষাখাত নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, সিলেটে অনেকগুলো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ রয়েছে। যেগুলো থেকে নেপালের ছাত্র-ছাত্রীরা কম খরচে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন।
এছাড়াও সিলেট থেকে কৃষি যন্ত্রপাতি ও কৃষি পণ্য আমদানি করতে পারেন। সিলেটের শিল্প মালিকগণ নেপালের রাষ্ট্রদূতকে সিলেটের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো সফরের অনুরোধ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে। বিশেষ করে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমান সরকার অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭০০ নেপালি ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে। আমরা আশাবাদী ভবিষ্যতে নেপাল থেকে আরও শিক্ষার্থী বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে উৎসাহী হবে। আমরা নেপালের শিক্ষার্থী ও বিনিয়োগকারীদের সিলেটে স্বাগত জানাই।
তিনি বলেন, পর্যটন খাতে সিলেট অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে দুই দেশের পর্যটন শিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
সভায় উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিনী দূর্গা মিশ্রা, নেপাল এম্বাসির সেকেন্ড সেক্রেটারি রঞ্জন যাদব, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন সাহা, সহ-সভাপতি তাহমিন আহমদ, সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআই’র পরিচালক খন্দকার সিপার আহমদ, প্রফেসর ড. ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল, প্রফেসর মো. তানভির আহমেদ চৌধুরী, ড. এমএ রকিব, ড. মো. রুবেল আহমেদ, সিলেট চেম্বারের পরিচালক মো. মামুন কিবরিয়া সুমন, মো. সাহিদুর রহমান, পিন্টু চক্রবর্তী, মুশফিক জায়গীরদার, আব্দুর রহমান, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মো. আব্দুর রহমান (জামিল), আলীমুল এহছান চৌধুরী, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, মো. আমিনুজ্জামান জোয়াহির, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর সাবেক পরিচালক মো. হিজকিল গুলজার, সাবেক পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৯ ঘণ্টা, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
এনইউ/কেএআর