ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পোড়াদহ মেলায় ছেলে-বুড়োর দৃষ্টি কাড়ে ‘হোন্ডা খেলা’

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
পোড়াদহ মেলায় ছেলে-বুড়োর দৃষ্টি কাড়ে ‘হোন্ডা খেলা’ হোন্ডা খেলা উপভোগ করছে দর্শনার্থীরা। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: চারপাশে কাঠ দিয়ে ঘিরে মাটির ওপর বানানো হয়েছে গভীর কূপ। নাম দেওয়া হয়েছে ‘হোন্ডা খেলা’।



বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বগুড়ার গাবতলীতে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় মাঠে দেখা যায়, মাঝখানে দুইটি রংচটা পুরনো মোটরসাইকেল ও দুইটি প্রাইভেটকার। ১০ মিনিটের এ খেলা দেখতে ৩০ টাকায় টিকিট কাটতে হয়। কূপটি তৈরিতে লোহার অ্যাঙ্গেল, খুঁটি, বাঁশ, নাট-বল্টুসহ আনুষাঙ্গিক আরও অনেক কিছুর ব্যবহার রয়েছে। বড় সড় জায়গা নিয়ে বানানো এই মৃত্যুকূপে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল নিয়ে খেলা দেখানো হয়। খেলাটি যখন চলে তখন দর্শককে তা দমবন্ধ করে দেখতে হয়। চালক অত্যন্ত দক্ষভাবে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে পুরো ১০ মিনিট কূপে গাড়ির ঘূর্ণি ছোটান। খেলা দেখতে দর্শকরা কাঠের সিঁড়ি বেয়ে কূপের ওপরে চারপাশে কাঠের তৈরি ছাদের মত অংশে দাঁড়িয়ে যান। সময় হওয়া মাত্রই চালক জোবায়ের হোসেন প্রথমে মোটরসাইকেলে ওঠে পড়েন। মাইকে ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেল চালু করে সেই কাঠের কূপের চারপাশে ঘুরতে থাকেন। কখনো কখনো এক হাত ছেড়ে কখনোবা দুই হাত ছেড়ে নানা কসরত দেখাতে থাকেন। ফটফট আওয়াজ তুলে মোটরসাইকেল ঘূর্ণি খেতে থাকে তীব্র গতিতে। কিছুক্ষণ পর আরেকটি মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটতে শুরু করেন রাব্বী। মোটরসাইকেল চালানোর পর এবার শুরু হয় প্রাইভেটকারের ঘূর্ণি। মো. মাহফুজ আহম্মেদ প্রাইভেটকার নিয়ে একইভাবে কূপের মধ্যে দাপিয়ে বেড়ান বেপরোয়া গাড়ি চালানোটাই দর্শকদের আনন্দ খোরাক।

মাহফুজের বাড়ি জয়পুরহাট জেলায়। প্রায় ১৭ বছর ধরে জীবনবাজি রাখা এই খেলা তিনি খেলে আসছেন বিভিন্ন মেলা আর উৎসব আয়োজনে। এ দিয়েই জোটে তার ও পরিবারের জীবিকা।

মাহফুজ বাংলানিউজকে জানান, এটা কোনো যাদু বা মন্ত্র বিদ্যা নয়। এটি শুধু দক্ষতা। ছোট থেকে তিনি নিজে নিজে বাড়িতে গর্ত করে এ খেলা রপ্ত করেছেন। এজন্য তাকে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জীবনকে অনেকটা হাতের মুঠোয় নিয়ে এ খেলা খেলতে হয়। খুবই ঝুঁকিপূর্ণ একটি খেলা। পুরো বিষয়টি দক্ষতা ও ক্ষিপ্রতার ওপর নির্ভর করে।

১৭ বছর খেলোয়াড় জীবনে তেমন কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তার কাছ থেকে নিজ ভাতিজা শামীম এ খেলা শিখেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন>>পোড়াদহ মেলার আড়তে এক দিনেই বিক্রি ১৪ কোটি টাকার মাছ

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।