ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সাতক্ষীরা উপকূলে পারশের পোনা সংকট, বিপাকে মৎস্য চাষিরা  

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০০ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২১
সাতক্ষীরা উপকূলে পারশের পোনা সংকট, বিপাকে মৎস্য চাষিরা   ...

সাতক্ষীরা: ঘের অধ্যুষিত সাতক্ষীরা উপকূলে পারশে মাছের পোনার সংকট দেখা দিয়েছে। এতে পোনা সংগ্রহে বিপাকে পড়েছেন মৎস্য চাষিরা।

এই সংকটকে কেন্দ্র করে পোনার দামও বেড়েছে অন্তত তিন গুণ। একইসঙ্গে পারশে মাছের পোনা আহরণ করে জীবিকা অর্জনকারী উপকূলের তিন-চার হাজার মানুষ চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সেইসঙ্গে আগামী মৌসুমে বাজারে পারশে মাছের দাম বৃদ্ধির শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, জেলেরা সুন্দরবনের গভীর নদীতে যেয়ে পারশে মাছের পোনা আহরণ করে নিয়ে আসতো। আহরণকৃত পোনা ঘের মালিকদের কাছে বিক্রি হতো আটশ থেকে নয়শ টাকা কেজিদরে।

তবে বনবিভাগের কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও আইনি জটিলতায় এ বছর সুন্দরবন ও সংলগ্ন নদী থেকে পারশে মাছের পোনা আহরণ সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে। এতে ঘের অধ্যুষিত সাতক্ষীরা উপকূলে পোনা সংকট দেখা দেওয়ায় এবং সময় মতো পারশে মাছের পোনা ছাড়তে না পারায় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ঘের মালিকরা।

যদিও লোকালয় সংলগ্ন নদী থেকে এখনো জেলেরা কিছু পোনা আহরণ ও বাজারে সরবরাহ করছেন। তবে তার দাম বেড়েছে তিন গুণ।

আব্দুল হালিমসহ একাধিক পারশে মাছের পোনা ব্যবসায়ী বলেন, অন্য বছর এ সময় প্রায় সব ঘেরে মাছ দেওয়া হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর বন বিভাগের কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে কোনো পারশের পোনা আহরণকারী বনের ভেতরে যেতে পারেনি। তাই লোকালয় সংলগ্ন নদী থেকে যে পরিমাণ পোনা আহরণ করা হয়েছে তারও দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। আট-নয়শ টাকার পোনা এখন দুই-তিন হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পারশে মাছের পোনা আহরণকারী ঝাপালি গ্রামের তারিক, খলিল ও হাকিম বলেন, বড় নদীতে যে পরিমাণ পারশে মাছের পোনা জন্মায় সে পরিমাণ মাছ বাঁচে না। জন্মানো পোনার তিন ভাগের দুভাগ নদীতে প্রাকৃতিকভাবেই মারা যায়। এজন্য আগে ভাগে ধরতে পারলে পোনাগুলো বাঁচানো সম্ভব হয়।

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সীগঞ্জ গ্রামের ঘের মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার দুই-তিনশ বিঘা ঘের রয়েছে। এসময় ঘেরে পারশের পোনা ছাড়া হয়ে যায়। কিন্তু পারশে মাছের পোনা না পাওয়ায় এখনো ছাড়তে পারিনি।

ঘের মালিক অরুণ সরদার বলেন, প্রতি বছর ঘেরে পারশে মাছের পোনা ছাড়ি। কিন্তু এ বছর এখানো ছাড়তে পারলাম না। অনেক সময় ভাইরাসে বাগদার পোনা সব মারা যায়। কিন্তু পারশে মাছ বিক্রি করে লোকসান পুষিয়ে নেওয়া যায়। যদি শেষ পর্যন্ত পারশের পোনা সংকট না কাটে তবে ঘের মালিকরা এবার লোকসানে পড়বে।

এ প্রসঙ্গে বন বিভাগের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহম্মেদ বলেন, পোনা মাছ ধরা ও পরিবহন করা আইন অনুযায়ী নিষেধ থাকায় নদীতে পারশের পোনাসহ সব পোনা আহরণ বন্ধ রাখা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।