ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

শত্রুতার জের গাছের ওপর!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২১
শত্রুতার জের গাছের ওপর! কলা বাগানের কলা ও কলা গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে সোহাগ সরদার নাম এক কলা চাষির এক একর ৩২ শতাংশ কলা বাগানের কলা ও কলা গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

বিক্রয়যোগ্য হওয়ার আগ মুহুর্তে ফসল ধ্বংস হওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন কলা চাষি সোহাগ।

বুধবার (১০ মার্চ) রাতে কামলা গ্রামের থাকা সোহাগের কলা ক্ষেতে এই তাণ্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা।

ক্ষতিগ্রস্থ চাষি ‍মোরেলগঞ্জ উপজেলার চিংড়াখালী গ্রামের বাসিন্দা। কামলা গ্রামের সুজন শিকদারের জমি লিজ নিয়ে কলা চাষ করতেন সোহাগ।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সকালে সোহাগের কলা বাগানে দেখা যায়, সারি সারি ফুলো কলার কাদি পরে রয়েছে। কিছু কলার মাঝ থেকে কাটা। কিছু কলা গাছও কেটে ফেলা। কিছু কলা গাছের সঙ্গে রয়েছে, কিন্তু সেসব কলার কাদিরও কয়েক জায়গায় কোপ দেওয়া। যা কয়েক দিনের মধ্যে শুকিয়ে যাবে। রাতের আধারে এভাবে কলা ও গাছ কেটে ফেলায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা, দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করে কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

সোহাগের কলা বাগানে কাজ করা শ্রমিক নয়ন কুমার হালদার ও মো. হোসেন শেখ বলেন, আমরা প্রায়ই সোহাগ ভাইয়ের কলা বাগানে কাজ করতাম। সকালে এসে দেখি কলা ক্ষেতের শতশত কাদি কলা কেটে ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা। অনেক কষ্ট ও যত্ন করে এই সবরি কলা উৎপাদন করতে হয়। প্রতিদিনই কলা বাগানের কোন না কোন কাজ করতে হয়। এরকম ক্ষতি মানুষ মানুষের করতে পারে আমাদের জানা ছিল না। আমরা এই ঘৃণিত কার্যক্রমের বিচার চাই।

সাবেক ইউপি সদস্য মো. লুৎফর রহমান সরদার বাংলানিউজকে বলেন, একটি গাছে কলা উৎপাদন করতে অনেক কষ্ট করতে হয়। এভাবে কলা কেটে ফেলার থেকে ক্ষেত মালিককে মেরে ফেলা ভাল। আামার এমন ক্ষতি হলে আমি মরে যেতাম।

ক্ষতিগ্রস্থ চাষি মো. সোহাগ সরদার বলেন, বছরে ৫০ হাজার টাকা হারিতে ১৩২ শতক জমি লিজ নিয়েছিলাম। মাটি কাটা, কলা গাছ রোপণ ও পরিচর্যায় প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে। ১৩০০ গাছের মধ্যে প্রায় হাজার খানেক গাছে কলা হয়েছিল। ১৫ দিন পরে বিক্রি শুরু করতে পারতাম। ঠিক সময়ে কলাগুলো বিক্রি করতে পারলে ছয় থেকে আট লাখ টাকার কলা বিক্রি করতে পারতাম। এই মুহুর্তে কলা ও গাছ কেটে আমাকে শেষ করে দিয়ে গেল। কিভাবে আমি এই ক্ষতি পোষাবো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই চাষি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শাহজাহান মাঝি বাংলানিউজকে বলেন, এলাকার বেশিরভাগ মানুষ কলা চাষ করে জীবনযাপন করেন। আমাদের এলাকার মানুষের কাছে বিক্রয়যোগ্য কলা সন্তানের মত। এভাবে একজন চাষির ক্ষতি মেনে নেওয়া যায় না। সঠিক তদন্ত পূর্বক দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর শাফিন মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত চাষির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনস্থল পরিদর্শন করেছে। দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২১
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।