ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৩০ এপ্রিলের পর বেসরকারিভাবে চাল আমদানি বন্ধ: খাদ্যমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২১
৩০ এপ্রিলের পর বেসরকারিভাবে চাল আমদানি বন্ধ: খাদ্যমন্ত্রী খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার

ঢাকা: আগামী ৩০ এপ্রিলের পরে বেসরকারিভাবে আমদানি করা আর কোনো চাল ঢুকবে না বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

তিনি বলেন, কৃষকদের যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এলসির সময় দিয়েছি।

বেসরকারিভাবে চাল আমদানির এলসি করার তারিখ আগেই শেষ হয়ে গেছে।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকালে আসন্ন বোরো সংগ্রহ নিয়ে অনলাইনে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান। এ সময় খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমসহ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন।

বোরো মৌসুমে চাল আমদানি অব্যাহত রাখা হবে কিনা এবং রাখলে কৃষকরা কতোটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হবে সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমাদের যে বেসরকারি আমদানি সেটা বন্ধ হয়েছে। বন্ধ হয়েছে বলতে যতটুকু এলসি করেছে সেটা ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আমদানি বা আনাতে হবে। যদি না আনতে পারে তাহলে ৩০ এপ্রিলের পরে বেসরকারিভাবে দেশে কোনো চাল ঢুকবে না। কৃষকের যাতে ক্ষতি না হয় সে কথা বিবেচনায় নিয়েই ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছি।

কৃষককে ন্যায্য মূল্য দেয়ার জন্য ধান ও চালের দাম বাড়িয়েছেন। এতে চালের দাম ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কিনা জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন বলেন, আমরা সবাই সিন্ডিকেটের কথা বলি কিন্তু সিন্ডিকেট কেউ ধরিয়ে দিতে পারে না। আমরাওতো সিন্ডিকেট পাইনি। যদি চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ ভালো থাকে তাহলে কোনো সিন্ডিকেট কাজ করে না। যেখানে ২০ হাজার মিল রয়েছে। সেখানে সিন্ডিকেট করতে পারে না এটা মনে রাখতে হবে। আগে অটোরাইস মিলে ক্রাসিংয়ের পাঁচ গুণের বেশি মজুদ রাখতে পারতো। কিন্তু আমরা এসআরও জারি করে কমিয়ে দিয়েছি। ফলে এখন সেটা তিন গুণের বেশি পারে না। এ তিন গুণের মধ্যে একটা বাজারে থাকবে, ক্রাসিংয়ে থাকবে ও গুদামে থাকবে। এ অবস্থায় সিন্ডিকেট করে পার পাওয়ার কথা না। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো যদি এরকম কোনো কিছুর খবর পান তাহলে দয়া করে আমাদের জানাবেন। আমরাও খোঁজে আছি, গোয়েন্দা সংস্থাও কাজ করছে। এর পাশাপাশি কোনো ফরিয়া ধান কিনতে গেলে তাকে লাইসেন্স নিতে হবে। একই সঙ্গে কি পরিমাণ ধান কিনলো, তার রির্টানসহ হিসাব দিতে হবে সাত দিন পর পর।

১৫ লাখ টন ধান কিনবেন বলে রোববার (২৫ এপ্রিল) কৃষিমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন কিন্তু আজ আপনি বলছেন সাড়ে ১১ লাখ টন চাল ও সাড়ে ছয় লাখ টন ধান এতে করে কৃষকের মনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ধান ও চাল মিলিয়ে আমাদের ১৫ লাখ টন চালের লক্ষ্যমাত্রা। এর মধ্যে সাড়ে ১১ লাখ টন চাল ও সাড়ে ছয় লাখ টন ধান। এ সাড়ে ছয় লাখ টন ধানকে চালে রূপান্তরিত করলে সাড়ে তিন বা চাল লাখ টন চাল পাওয়া যাবে। সে হিসেবে ১৫ লাখ টন বা তার বেশি চাল সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে।  

২০০ পেডি সাইলোর অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন আরও বলেন, ৫ হাজার টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ২০০টি পেডি সাইলো করার সিদ্ধান্ত নিয়ে এ সংক্রান্ত একটি প্ল্যান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারপর পাইলট প্রকল্প হিসেবে ৩০টি জিওবি ফান্ডের মাধ্যমে অনুমোদন করা হয়। সেখানে ৫ হাজারের স্থানে ভলিউম বাড়িয়ে ১০ হাজার করা হয়েছে। এছাড়া  বিদেশি ফান্ডে আরও ১৭০টি পেডি সাইলোর জন্য ইআরডিতে আবেদন করা হয়েছে।  

সংবাদ সম্মেলনে খাদ্য সচিব বলেন, আমাদের সাড়ে ছয় লাখ টন ধান, সাড়ে ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল ও এক লাখ টন আতপচাল কনভাট করলে আমাদের ১৫ লাখ ২০ হাজার টন চাল হবে। প্রয়োজন হলে আমরা আরও বেশি কিনতে পারবো। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ধান ক্রাসিং নিয়ে। বরিশাল এলাকায় আমাদের প্রায় ৬০০ টন ধান রয়েছে যা কোনো মিল ক্রাস করে দিচ্ছে না। কারণ বরিশালে কোনো মিলার নেই। তাই ধান কিনে সারা বছর আমাদের ধান রেখে দিতে হচ্ছে। এসমস্ত জটিলতা আছে আমাদের। এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ছয় লাখ টন ধান কিনবো। প্রয়োজন হলে আরও কেনা হবে।

একই সঙ্গে ধান দিতে লটারিতে কৃষকের নাম উঠলে সে যাতে অন্য কারো কাছে স্লিপটা বিক্রি না করে সংবাদ সম্মেলনে সেই অনুরোধ জানান খাদ্য সচিব নাজমানারা খানুম।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২১
জিসিজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।