ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

‘খোরশেদের এই মেহনত আল্লাহ কবুল করবো’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩১ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২১
‘খোরশেদের এই মেহনত আল্লাহ কবুল করবো’

নারায়ণগঞ্জ: ‘খোরশেদ আমাগো করোনায় দৌড়ায় আহে, আমাগো বিপদে আহে, আমাগো খাওন না থাকলে খাওন দেয় আর ঈদের লাইগ্যা আমাগো চাইল, ডাইল, তেল, দুধ, চিনি, সেমাই, লবণ হগলই দিসে। আল্লাহ ওর এই মেহনত কবুল করবো’।



মঙ্গলবার (১১ মে) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের ঈদসামগ্রী হাতে পেয়ে শহরের আমলাপাড়ার বাসিন্দা ৭২ বছর বয়সী কুলসুম আরা বেগম এসব কথা বলেন।

এর আগে ২২ রমজান থেকে প্রায় ৯ হাজার পরিবারে ঈদসামগ্রী দেন খোরশেদ। নিজ ওয়ার্ডের প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে খোঁজ নিয়ে সার্ভে করে যাদের ঈদ উপহার সামগ্রী প্রয়োজন তাদেরকেই ঈদসামগ্রী দেন তিনি। সবার ঘরে ঘরে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে এ খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন খোরশেদ। খোরশেদের উপহার সামগ্রী পেয়ে তার ওয়ার্ডের এমন হাজারো মানুষের একই কথা, তারা খোরশেদের এই ভালোবাসার মূল্য ভালোবাসা ও দোয়া দিতে দিতে চান।

খোরশেদ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর। টানা তিনবার তিনি সিটি করপোরেশনের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত একজন কাউন্সিলর। তার এলাকার ৮ হাজার মুসলিম ও ১ হাজার হিন্দু পরিবারের জন্য এবার তিনি প্রস্তুত করেছেন ঈদসামগ্রী।

করোনার শুরু থেকেই মানবসেবায় অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করা কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ করোনা সংক্রান্ত সেবা দাফন/ সৎকার, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবাদান, প্লাজমাদান, বিনামূল্যে ওয়ার্ডবাসীকে সবজি বিতরণ, ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সাপোর্টসেবা দিয়ে আলোচনায় আসেন। ইতোমধ্যে ২০২টি দাফন/সৎকার করেছেন তিনি ও তার টিম।

এর মধ্যে ১৭ বছর ধরে চলা তার ঐতিহ্য তার ওয়ার্ডের প্রতিটি মসজিদে ইতিকাফে বসা মুসল্লিদের উপহার সামগ্রী দেওয়ার ধারাবাহিকতা এবারো ধরে রেখেছেন তিনি। এবারো ওয়ার্ডের ৮৭ জন ইতিকাফকারীকে তিনি ঈদ উপহার সামগ্রী দিয়েছেন মসজিদে মসজিদে গিয়ে।

এছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হয়ে ওয়ার্ডবাসীর যারা আইসোলেশনে রয়েছেন তাদেরকে টিম খোরশেদের স্বেচ্ছাসেবকরা নিয়মিত যোগাযোগ করে চিকিৎসা সেবাদান করছেন ও অক্সিজেন সেবা দিচ্ছেন। তাদের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে টিম খোরশেদের সদস্যরা পাশে থাকছেন এবং তাদের ঘরে ঘরে ঈদের বিশেষ উপহার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।  
খোরশেদ জানান, এ কার্যক্রম প্রতিবছরের মত এবারো চলছে। করোনায় যদি আমরা খেয়ে থাকি তাহলে আমার ওয়ার্ডবাসীর সবাই খেয়ে থাকবে। আমার ঘরে ঈদ হলে প্রতিটি ওয়ার্ডবাসীর ঘরে ঈদ হবে। আমরা সবাই মিলে একটি পরিবার আর এ পরিবারের কাউকে বাদ দিয়ে ঈদ উদযাপন করলে ঈদের আনন্দ অপূর্ণ থেকে যাবে। আমি চেষ্টা করছি ওয়ার্ডবাসীর পাশে থাকার।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২১
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।