ঢাকা, সোমবার, ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৩ মার্চ ২০২৫, ০২ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যান চলাচলে কচ্ছপ গতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২১
ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যান চলাচলে কচ্ছপ গতি

টাঙ্গাইল: স্বাভাবিকের তুলনায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে চারগুন যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। এতে করে যানবাহন কচ্ছপ গতিতে চলছে।

ফলে ঈদে ঘরমুখো মানুষের গন্তব্যে পৌঁছতে সময় লাগছে কয়েকগুন বেশি। এতে করে রোদে পুড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের।

এদিকে বেশিরভাগই যাত্রীর মুখে মাস্ক নেই। নেই স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার বালাই। গাদাগাদি করে যে যেভাবে পারছেন গন্তব্যে ছুটছেন। এতে করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।

বঙ্গবন্ধু সেতু সূত্র জানায়, শুক্রবার মধ্য রাত থেকেই যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। বুধবার ভোরে সিরাজগঞ্জের দিকে যানবাহন টানতে না পারায় টাঙ্গাইলের অংশে যান চলাচলের গতি অনেক কমে আসে। এ কারণে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে দেলদুয়ার উপজেলার বাঐখোলা পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার যানবাহনে দীর্ঘ লাইন লেগে যায়। তবে আগের মতো যানজট না হলেও যানবাহন চলাচল করছে ধীরগতিতে। রাস্তায় রয়েছে প্রচুর ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল। এছাড়া সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই চলছে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস।

>>>দুর্ভোগ মেনেই নাড়ির টানে ঘরে ফেরা

বঙ্গবন্ধু সেতু টোলপ্লাজা সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৫১ হাজার ৯৪২টি যানবাহন সেতু পার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে দুই কোটি ৭৩ লাখ ৮ হাজার ৭৩০ টাকা। স্বাভাবিক অবস্থায় এ সেতু দিয়ে ১২-১৩ হাজার যানবাহন পারাপার হয়।

গাজীপুর থেকে বগুড়াগামী পিকআপ ভ্যানের যাত্রী মহসিন মিয়া বাংলানিউজকে জানান, রাত ৩টায় তিনি জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে পিকআপ ভ্যানে উঠেছেন। এলেঙ্গা পর্যন্ত পৌঁছতে সাত ঘণ্টা সময় লেগেছে। স্বাভাবিক অবস্থায় এ রাস্তাটুকু পৌঁছতে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা সময় লাগে।  

গাইবান্ধাগামী পিকআপ ভ্যানের যাত্রী ইমরুল কায়েস জানান, গাজীপুর থেকে সাত ঘণ্টায় তিনি টাঙ্গাইল শহর বাইপাসে পৌঁছেছেন। এভাবে গাড়ি চলতে থাকলে বাড়ি যেতে তার ভোর হয়ে যাবে।  

একই পিকআপের যাত্রী মুন্নি আক্তার জানান, একদিকে রোদ অন্যদিকে যানবাহনের চাপ। ১০ মিনিটের রাস্তা পারি দিতে আধাঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। এভাবে টানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পিকআপ ভ্যানে দাঁড়িয়ে থেকে পা ব্যথা হয়ে গেছে।  

বগুড়াগামী ট্রাকের যাত্রী আব্দুর রহমান জানান, তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি ঢাকা থেকে মির্জাপুর এসেছেন ভেঙে ভেঙে। সেখান থেকে সকাল ১১টায় বগুড়ারগামী একটি ট্রাকে উঠেছেন ৭০০ টাকা ভাড়া মিটিয়ে। এখন পর্যন্ত তিনি কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পার হতে পারেননি।

এদিকে বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়াও শতশত মোটরসাইকেলও চলছে এই মহাসড়কে। কোন যানবাহন না পাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব মোটরসাইকেলেই গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন অনেকে।  

সিরাজগঞ্জের হটিকমরুলগামী মোটরসাইকেলের যাত্রী মাসুদ রানা বাংলানিউজকে জানান, তিনি এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে হটিকমরুল মোড় পর্যন্ত এক হাজার টাকা ভাড়া মিটিছেন। এখন মোটরসাইকেল চালক আরেক জন যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন।

হাইওয়ে পুলিশের এলেঙ্গা ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত (ইনচার্জ) ইয়াসির আরাফাত বাংলানিউজকে জানান, ঈদের কারণে এই মহাসড়কে স্বাভাবিকের তুলনায় চারগুন যানবাহন চলাচল করছে। এ কারণে সিরাজগঞ্জের দিকে যানাবাহন টানতে না পারায় টাঙ্গাইল অংশে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল ব্যহত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।