রাজশাহী: ইংল্যান্ডে যাচ্ছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সুমিষ্ট আম। শুক্রবার (২৮ মে) বিকেলে বাঘা উপজেলা থেকে আম রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে নানান বিধিনিষেধের মধ্যেও বিদেশে আম রপ্তানি শুরু হওয়ায় স্থানীয় আম চাষিদের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছে।
ঢাকার ‘ফুড অ্যান্ড ভেজিটেবল’ এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়শন এই আম রপ্তানিতে সহযোগিতা করছে। তাদের মাধ্যমে আমের প্রথম চালান ইংল্যান্ডে পাঠানো হচ্ছে। প্রথম চালান হিসেবে বাঘার পাকুড়িয়া থেকে তিন মেট্রিক টন খিরসাপাত (হিমসাগর) আম ইংল্যান্ডে পাঠানো হচ্ছে।
জানতে চাইলে বাঘার কনট্রাক্ট ফার্মার অ্যাসোসিয়শন সভাপতি সফিকুল ইসলাম ছানা জানান, করোনো পরিস্থিতির মধ্যেও বিদেশে আম রপ্তানির বিষয়টি তাদের কাছে অনেক স্বস্তির। গত বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে কঠোর লকডাউন ছিল। তাই গত মৌসুমে আম পাঠানো সম্ভব হয়নি। এবছর চাষিরা বিদেশে আম পাঠাতে পারছেন। এতে অনেকেই উৎসাহিত হবেন। ফলে বেশি বেশি করে আম বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা যাবে।
এতে স্থানীয় কৃষকরা মুনাফার মুখ দেখবেন এবং অর্থনীতির চাকাও সচল হবে বলে মন্তব্য করেন কনট্রাক্ট ফার্মার অ্যাসোসিয়শন সভাপতি।
এক প্রশ্নের জবাবে সফিকুল ইসলাম ছানা বলেন, বাঘার ২০ জন সফল আম চাষি তাদের সঙ্গে রয়েছে। বিদেশে আম রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তাদের এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী কৃষি সম্পসারণ অধিদফতর আম চাষিদের প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহযোগিতা করেছে।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানান, আম রপ্তানির জন্য এরই মধ্যে ২০ জন চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পরে আম রফতানির জন্য তাদের তালিকাভুক্ত করেন। এরপর বাগানে উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদিত ও ক্ষতিকর রাসায়নিকমুক্ত আমের নমুনা ঢাকা বিএসটিআই ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এরপরে বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। রাতে এগুলো রাজধানী ঢাকায় যাবে। সেখান থেকে বাকি আনুষ্ঠানিকাতা শেষে ইংল্যান্ডে রপ্তানি হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান আরও জানান, বিরূপ আবহাওয়ায় আম চাষ কঠিন হলেও আমে যাতে কোনো ধরনের পোকার আক্রমণ না ঘটে সেজন্য স্থানীয় আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ পদ্ধতির মাধ্যমে আম চাষ করেছেন। এতে খরচ বাড়লেও একদিকে আমের গুণগত মান বাড়ছে অন্যদিকে দেশ-বিদেশের ক্রেতারা বেশি দাম দিয়েও আম কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
আর রাজশাহীর বাঘা-চারঘাটের সুমিষ্ট আমের খ্যাতি রয়েছে বিশ্বজুড়েই। প্রতি বছর নানান প্রতিকূলতার মধ্যেও অন্য উপজেলার তুলনায় বাঘা-চারঘাটে গুণগতমানের আম সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয়। এখানকার আম আরও উন্নত পদ্ধতি অর্থাৎ ‘ফ্রুট ব্যাগিংয়ের মাধ্যমে উৎপাদন হচ্ছে। তাই দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বছর বছর বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। গতবছর করোনার কারণে না পারলেও এবার বিদেশে আম রপ্তানি শুরু করা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৪৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২১
এসএস/এএ