ঢাকা: পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন বা স্বাস্থ্যবিধি বিষয়টিকে একত্রে আলাদা খাত হিসেবে স্বীকৃতি নিয়ে এ খাতে বাজেট বরাদ্দ চান বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ খাতের সঙ্গে মিশে থাকা এ খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তার তুলনায় বরাদ্দের পরিমাণ বাড়াতেও সুপারিশ তাদের।
রোববার (৩০ মে) আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতের বরাদ্দ নিয়ে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওয়াটারএইড, ইউনিসেফ, পিপিআরসি, ফানসা-বিডি, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম, এফএসএম নেটওয়ার্ক, স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল ও ওয়াশ অ্যালায়েন্সের যৌথ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পিপিআরসির চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
উপস্থাপনার মাধ্যমে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, এ খাতটিকে আলাদাভাবে এখনও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্য আর পরিবেশের সঙ্গে মিশে আছে এটি। অথচ এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। স্বাস্থ্যবিধি খাতের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি এখনও পরিষ্কার নয়। সবার আগে এটিকে আলাদা খাত হিসেবে চিহ্নিত করে স্বীকৃতি দিতে হবে। সেইসঙ্গে এ খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পর্যায়ের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, টয়লেটের ভেতরে বা এর কাছাকাছি যে সাবান রাখতে হবে সেই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন মাত্র ২২ শতাংশ মানুষ। শুধু ৬১ শতাংশ বাসাবাড়িতে পানি ও সাবান দু’টোই পাওয়া যায়। স্কুল পর্যায়ে এ অবস্থা আরও শোচনীয়। ২০১৮ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রতি ১১৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র একটি করে টয়লেট থাকে। ৬৪ শতাংশ স্কুলের টয়লেট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পাওয়া যায়। মাত্র ৩৪ শতাংশ স্কুলে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা আছে।
স্বাস্থ্যবিধিজনিত দুর্বলতার কারণে নারীরাও বেশ ঝুঁকিতে আছেন বলে জানান ড. জিল্লুর। তিনি বলেন, মাসিক ঋতুচক্রজনিত স্বাস্থ্যবিধি না মানায় প্রায় ৫০ শতাংশ নারী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন। করোনা এর কারণে অনেক পরিবারে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিলে অনেকেই আর স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করছেন না। তারা পুরনো কাপড় ও অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর জিনিস ব্যবহার করছেন। কাজেই সব মিলিয়ে দেশের মানুষের স্বার্থে স্বাস্থ্যবিধি খাতে আরও অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে সরকারকে।
ওয়াটার এইডের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যেটা প্রশংসনীয় দিক। তবে স্বাস্থ্যবিধি বা হাইজেন খাতে সেই অর্থে বরাদ্দ আসেনি। স্বাস্থ্যখাতে ১০ হাজার কোটি টাকার একটা থোক বরাদ্দ ছিল যেটি কোথায় কিভাবে ব্যয় হবে সেই বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না। অথচ স্বাস্থ্যবিধি খাতে বরাদ্দ ছিল না। করোনা মোকাবিলায় সরকার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে বরাদ্দ রেখেছে। মাস্ক পরার পাশাপাশি নিয়ম করে হাত ধোয়াও অতি গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ খাতেও বরাদ্দ দিতে হবে। আর বরাদ্দের টাকা যেন সিটি করপোরেশন থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে যায় সে বিষয়টিও সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২১
এসএইচএস/আরবি