রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) মেধাবী শিক্ষার্থী শাহীনুজ্জামান লিমন চিকিৎসার অভাবে পা কেটে ফেলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ ছয় মাস থেকে চিকিৎসা করাতে না পারায় পচন ধরেছে পায়ে।
শাহীনুজ্জামান লিমন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ফয়েজ পন্ডিতেরপাড়ার লোকমান আলীর ছেলে এবং বেরোবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের ফাইনাল বর্ষের ছাত্র।
শাহীনুজ্জামান লিমন বাংলানিউজকে জানান, প্রায় সাত মাস আগে নীলফামারী শহর থেকে সিএনজি (থি হুইলার) করে বাড়ি ফেরা পথে দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। দুর্ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হলেও সৌভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। তবে তার বাম পায়ের হার (টিবিয়া-ফিবুলা) ভেঙে যায়। পরে নীলফামারী সদর হাসপাতালে তার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে রংপুরের প্রাইম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পঙ্গু হাসপাতালে প্রায় এক সপ্তাহ চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসক এক মাসের মধ্যে হার জোড়া লাগবে বলে জানায়।
কিন্তু দেড় মাস গেলেও হার জোড়া না লাগায় আবারও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে অপারেশনের পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে চার লাখ টাকারও বেশি খরচ প্রয়োজন। কিন্তু এত টাকা তার পরিবারের পক্ষে দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় চার মাসেও অপারেশন করা হয়নি। এমতাবস্থায় তার বাম পায়ে পচন ধরেছে। ধীরে ধীরে পা ছোট হয়ে আসছে। দ্রুত সময়ে অপারেশন করতে না পারলে তার পা কেটে ফেলতে হবে বলে আশঙ্কা তার।
তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিমন দ্বিতীয়। তার বড় ভাই একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করলেও তা চলে যায়। বর্তমানে স্ট্রোক করে চিকিৎসাধীন তিনিও। তার একমাত্র বোনের বিয়ে হলেও একমাত্র ছোট ভাই দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। লিমনের বাবা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করায় পরিবারের খরচ ও দুই ভাইয়ের চিকিৎসা করাতেই সব সম্বল শেষ হয়ে গেছে। এছাড়াও ব্যাংক লোন রয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। বিক্রি করার মতো জমি-জমাও নেই। যতটুকু আছে, তা আবার বন্ধক অবস্থায়।
এমন পরিস্থিতিতে সমাজের বিত্তশালীদের কাছ থেকে সহায়তা চায় লিমন তার বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার। আবারও প্রিয় ক্যাম্পাসের নির্মল বাতাসে হেঁটে চলে ক্লাস করতে চান তিনি। বড় হয়ে সমাজের সেবা করার প্রত্যয় তার।
এ বিষয়ে লিমনের বন্ধু রাজিব হাসান রাজু বাংলানিউজকে বলেন, আমার মেধাবী বন্ধুর জন্য আপনারা মানবতার হাত বাড়িয়ে দিন, যেন আমরা আবারো একসঙ্গে চলতে পারি।
শাহীনুজ্জামান লিমন বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংকে লোন নেওয়া আছে তাই আর লোন নিতেও পারছি না। বর্তমানে চার লাখ টাকা আমার পরিবারের পক্ষে জোগাড় করাও সম্ভব না। আমার পরিবার অনেক কষ্ট করেও টাকা ম্যানেজ করতে পারছে না।
জরুরিভাবে পায়ের অপারেশন করা না হলে আমার বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। আমি আবার নিজ পায়ে চলতে চাই। পড়াশোনা করে দেশ ও জাতির সেবা করতে চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২১
এসআরএস