ঢাকা: প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সারাদেশে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন দেশি-বিদেশি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও উন্নয়নকর্মীরা।
তারা বলেছেন, প্রতিটি গ্রামে কমিউনিটি হেলথ ওয়ার্কার (সিএইচডল্লিউ) বা কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী গড়ে তোলা গেলে তারা স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পারবে।
বুধবার (৭ জুলাই) গুড নেইবারস-বাংলাদেশ (জিএনবি) আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনারে এ সুপারিশ করেন তারা। সংগঠনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ওই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জিএনবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর এম মাঈনউদ্দিন মঈনুল।
আলোচনায় অংশ নেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন পরিচালক (পলিসি এন্ড প্ল্যানিং) ও ভালো এ্যাভেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নাজনীন আক্তার, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আবু জামিল ফয়সাল, কোরিয়ার প্রকল্প কর্মকর্তা সিওন লি, উন্নয়নকর্মী ফারজানা ব্রাউনিয়া প্রমুখ।
সেমিনারে গুড নেইবারস-কোরিয়া ও গুড নেইবারস-কম্বোডিয়ার প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে এম মাঈনউদ্দিন মঈনুল তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গুড নেইবারসের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, মহামারি করোনাকালেও কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন। অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে তারা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। এই কাজের সঙ্গে সরকারের সম্পৃক্ততা জরুরি। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বিত কাজের মাধ্যমে আগামীতে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আবু জামিল ফয়সাল বলেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কমিউনিটি হেলথ ওয়ার্কার (সিএইচডল্লিউ) প্রগ্রাম দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। গ্রামের সাধারণ নারীরা এখানে বিশেষ দায়িত্ব পালন করছে। তারা বাল্যবিয়ে বন্ধ ও অনিরাপদ গর্ভধারণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই কার্যক্রম পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে সহায়তা করতে পারে। বিষয়টি সরকারের আগামী পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্ত করার সুপারিশ করেন তিনি।
অধ্যাপক ড. নাজনীন আক্তার বলেন, কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবা ইতোমধ্যে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। সারাদেশে এই কার্যক্রম গড়ে তোলা দরকার। বিষয়টি নিয়ে সরকারের নীতি-নির্ধারক মহলের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। কমিউনিটি ভিত্তিক এই কার্যক্রমের মাধ্যমে দ্রুত সফলতা অর্জন করা সম্ভব।
উন্নয়নকর্মী ফারজানা ব্রাউনিয়া বলেন, মাতৃমৃত্যু হার কমাতে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের জন্য শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য দু'টোই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। তাই গ্রামে গ্রামে তাদেরক সংগঠিত করতে হবে। তরুণ-তরুণীদের এই কাজে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০২১
এসই/আরএ