টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের ৭৭ বছর বয়সি রাবেয়া বেগম। পেশায় গৃহিনী।
শুধু রাবেয়া বেগম নয়, তার মতো টাঙ্গাইল জেলার ৯৮টি ইউনিয়ন ও তিনটি পৌরসভার ৩১৮টি কেন্দ্রে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনের পাশাপাশি গণটিকা চালু হওয়ায় জেলার সাধারণ মানুষও টিকা নিতে পারছেন। এতে দীর্ঘদিন আতঙ্কের জনসাধারণের মধ্যে স্বস্তি মিলেছে।
রাবেয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবেশিদের কাছে শুনেছি করোনার টিকা সোনার হরিণ। এ টিকা গ্রহণ করতে হলে ইন্টারনেটে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। এর কিছুদিন পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে টিকা নিতে হয়। পরিচয়পত্র জমা দিয়েই মিলছে ‘সোনার হরিণ’। আমার খুবই ভাল লাগছে। প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের ১১টি পৌরসভার মধ্যে তিনটি পৌরসভার ২৪টি কেন্দ্রে ও ১১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯৮টি ইউনিয়নে গণ টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রত্যেকটি ইউনিয়নের তিনটি করে কেন্দ্রে ৬০০ করে টিকা দেওয়া হবে। বাকি ইউনিয়নগুলোতে শিশুদের রুটিন টিকা দেওয়ার কার্যক্রম থাকায় পরবর্তীকালে সেখানে করোনা টিকা দেওয়া হবে।
এ দিকে শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের বাসাইলে নথখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম। বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম, কাশিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান মির্জা রাজিক প্রমুখ।
টাঙ্গাইল শহরের পৌর উদ্যানে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান প্রমুখ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি কেন্দ্রে সকাল ৯টার আগে থেকেই সাধারণ মানুষ টিক নেওয়ার জন্য ভিড় করে। কেন্দ্রগুলোতে টিকা নিতে আগ্রহী বয়স্ক নারী-পুরুষের উপস্থিতি ছিলো। তবে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। হাতের কাছে টিকা পাওয়ায় অনেক খুশি গ্রামের সাধারণ মানুষ। তারা এই টিকা কার্যক্রম আগামীতেও চালু রাখার দাবি জানান।
জোৎস্না বেগম বাংলানিউজকে বলেন, করোনা টিকা দেওয়া শুরু হওয়ার পর থেকে ইচ্ছে ছিলো টিকা নিবো। কিন্তু রেজিস্ট্রেশনের বিষয় জানা ছিলো না। ভোটার আইডি কার্ড জমা দিয়ে সহজেই টিকা নিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।
টিকা নিতে আসা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য খন্দকার ছানোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বাড়ি পাশে করোনাভাইরাসের টিকা পাবো এটা কখনও কল্পনাও করি নাই। বাড়ি পাশ থেকে করোনা টিকা নিতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আমাদের সময় ও যাতায়াত খরচ উভয়ই সাশ্রয় হয়েছে।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ১২টি উপজেলার ১১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯৮টি ইউনিয়নের ২৯৪টি কেন্দ্রে ৫৮ হাজার ৮০০ টিকা দেওয়া হচ্ছে। বাকি ১৭টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় শিশুদের রুটিন টিকা দেওয়ার কার্যক্রম থাকায় পরবর্তীকালে সেখানে কোভিডের টিকা দেওয়া হবে। ১১টি পৌরসভার মধ্যে টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৮টি কেন্দ্রে ৩ হাজার ৬০০ টিকা, মধুপুর ও গোপালপুর পৌরসভা এলাকায় ছয়টি কেন্দ্রে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে টিকা দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২১
এনটি