ঢাকা, সোমবার, ১২ মাঘ ১৪৩১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

এমপি শিমুলের বাবাকে রাজাকার বলায় রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২১
এমপি শিমুলের বাবাকে রাজাকার বলায় রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা ড. সুজিত সরকার ও শফিউল আযম স্বপন

নাটোর: নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাবা মরহুম হাসান আলী সরদারকে রাজাকার বলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুজিত সরকার ও নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপনের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ এফ এম গোলজার রহমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন এমপি শিমুলের ছোট ভাই সাজেদুল ইসলাম সাগর।

 

মামলাটি গ্রহণ করে বিকেলে আদালতের বিচারক সিপিসি-২, র‌্যাব নাটোর ক্যাম্পের কমান্ডারকে আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন।

ড. সুজিত সরকারের বাড়ি জেলার সিংড়া উপজেলার কুমগ্রামে এবং শফিউল আযম স্বপন নাটোর শহরের আলাইপুরে।  

মামলার বরাত দিয়ে নাটোর জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুজিত সরকার তার লেখা ‘নাটোর জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ গ্রন্থে এমপি শিমুলের বাবা হাসান আলী সরদারকে রাজাকার হিসেবে উল্লেখ করেন।

গত ২৫ জুলাই স্থানীয় একটি রেঁস্তরায় এক সংবাদ সম্মেলনে রেফারেন্স হিসেবে তার লেখা ওই বইটি উপস্থাপন করে এমপি শিমুলের বাবাকে রাজাকার বা স্বাধীনতাবিরোধী বলে আখ্যায়িত করে বক্তব্য রাখেন নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন।  

এছাড়া এমপি শিমুলকে রাজাকারের সন্তান বলা হয় ওই সংবাদ সম্মেলনে। এতে রাজনৈতিকভাবে শিমুল ও তার পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং মানহানি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

মামালায় আরো উল্লেখ করা হয়, অধ্যাপক ড. সুজিত সরকারের লেখা বইটিতে ২০০৯ সালের সংস্করণ ও ২০২১ সালের দ্বিতীয় সংস্করণে অসামঞ্জস্য তথ্য উপস্থান করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৯৭২ সালের রাজাকারের চূড়ান্ত তালিকাতে বাদীর বাবার নাম না থাকা সত্বেও উল্লেখিত দুইটি গ্রন্থে মনগড়াভাবে তার বাবার নাম রাজাকারের তালিকায় মুদ্রন, প্রকাশ ও প্রচার করায় তাদের পরিবারের সামাজিক, রাজনৈতিক সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।  

মামলাটিতে ছয়জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতদের সাক্ষী করা হয়েছে। মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন অ্যাডভোকেট আরিফ হোসেন।

আদালতে মামলা দায়েরের সময় জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক দিলীপ কুমার দাস, জেলা যুবলীগ সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমেদ সেলিম, মহিলা নেত্রী রত্না পারভিন, আইনজীবী সায়েম হোসেন উজ্জ্বল, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুজিত সরকার ও নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন বাংলানিউজকে জানান, মামলার কথা শুনেছেন। আইনগতভাবে তারা এ মামলাটি মোকাবিলা করবেন।

সিপিসি-২, র‌্যাব-৫, নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. সানরিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, এখনও আদালতের কোনো আদেশ তার হাতে আসেনি। আদালত থেকে আদেশের কপি পেলে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

এর আগে এমপি শিমুলের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় জিডি করেন রাবি অধ্যাপক সুজিত সরকার। কিন্তু ওই অভিযোগের সত্যতা পায়নি পুলিশ। পরে ওই অভিযোগ খারিজ করে দেওয়া হয়।

এ ঘটনার পরে এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলকে ‘সন্ত্রাসী’ বলার অভিযোগে ৯ আগস্ট রাতে বোয়ালিয়া মডেল থানায় রাবি শিক্ষক ড. সুজিত সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যা তদন্ততাধীন রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।