ঢাকা: বিধি নিষেধ শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে বিধি নিষেধ শিথিল হওয়ায় অর্ধেক গণপরিবহন চলাচল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর গাবতলী মিরপুর ১১ ও ১২ নম্বর এলাকার বাসস্ট্যান্ড ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
রব রব পরিবহনের চালক মো. রিপন বাংলানিউজকে বলেন, ১৯ দিন পরে রাস্তায় নামছে গণপরিবহন। বিধি নিষেধের কয়েকদিন আমাদের কেউ কোনো খোঁজ নেয়নি। মালিকদের কাছ থেকেও আমরা কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পাইনি। অনেক দুঃখ দুর্দশার মধ্যে দিন পার করেছি। বিধি নিষেধের দিনগুলিতে মা-বাবা খাবার জোগাড় করতে কুলি হয়েছি, রিকশা চালিয়েছি। ১০টি টাকা দিয়ে কেউ সাহায্য করেনি আমাদের।
তিনি বলেন, বুধবার রাস্তায় পরিবহন নামাবো, এজন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও ইঞ্জিন মেরামত করে পরীক্ষা করে দেখেছি সবকিছু ঠিক আছে কিনা। আবার শুনছি পাঁচ-ছয় দিন পরে বিধি নিষেধ দিতে পারে সরকার। তাহলে ৬-৭ দিন গাড়ি চালিয়ে কয় টাকা আর রোজগার করবো? এরইমধ্যে আমার দুই মাসের বাড়ি ভাড়া বকেয়া হয়ে গেছে। যদি আবার বিধি নিষেধ দেয় তাহলে আর ঢাকায় থাকতে পারবো না। গ্রামের বাড়ি চলে যাবো।
পরিস্থান পরিবহনের চালক আক্তার হোসেন বলেন, করোনার কারণে গত বছর থেকে এ পর্যন্ত ধারদেনা করেছি তিন লাখ টাকা। আমার পাঁচ মাসের ঘর ভাড়া বকেয়া হয়ে গেছে। টাকার অভাবে ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছি। বুধবার থেকে পরিবহন চলাচল শুরু হলে পরিবার নিয়ে কোনো মতে খেয়ে বাঁচতে পারবো।
তেতুলিয়া পরিবহনের এক বাস মালিক মো. মমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বাসের সবকিছু ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখছি। যন্ত্রাংশের যদি কোনো ত্রুটি থাকে তা ঠিক করে বুধবার (১১ আগস্ট) রাস্তায় বাস নামবো। রাস্তায় বাস নামলে যেন কোনো সমস্যায় পড়তে না হয় এজন্য আগে থেকে টেস্ট করে নিচ্ছি।
তিনি বলেন, আমার তেতুলিয়া বাস ছিল দুটি। মায়ের চিকিৎসা ও অভাবের কারণে একটি বাস বিক্রি করে দিয়েছি। এখন যে বাসটি আছে সেটা আমি নিজেই চালাই। এটা দিয়ে কোনো মতে আয় করে পরিবার নিয়ে খেয়ে বেঁচে থাকবো।
তিনি আরও বলেন, বিধিনিষেধে রাস্তায় ঠিকমত পরিবহন না চলায় আমাদের তেতুলিয়া পরিবহনের মূল মালিক ছয় মাসের অফিস ভাড়া দিতে পারেনি। আগে আমাদের রাস্তায় বাস চলতো ৭০-৮০টি। বুধবার রাস্তায় আমাদের বাস নামবে মাত্র আট থেকে ১০টি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২১
এমএমআই/জেডএ/আরআইএস