ঢাকা, শুক্রবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিজ্ঞাপন দেখে চাকরির আবেদন করলেই অর্থলুট!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২১
বিজ্ঞাপন দেখে চাকরির আবেদন করলেই অর্থলুট!

ঢাকা: পত্রিকায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমিউনিটি কেন্দ্র, সুখি পরিবার, মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র, অ্যাপোলো কনজিউমার প্রোডাক্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোভনীয় বেতনে সরকারি চাকরির বিজ্ঞাপন ছাপানো হতো। সেসব পদে আবেদন করলেই ধাপে ধাপে প্রতিজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতো একটি চক্র।

চাকরি দেওয়ার নাম করে গত কয়েক মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া এই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অর্গানাইজড ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগ।  

গ্রেফতাররা হলেন-ফিরোজ, আব্দুল কুদ্দুস, মাঈনুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, তৌকির আহমেদ, কফিল উদ্দিন চৌধুরী। এদের মধ্যে ফিরোজ এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড বলে জানিয়েছে পিবিআই।

রোববার (১৫ আগস্ট) দুপুরে পিবিআইর বনশ্রী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান।

তিনি জানান, শনিবার (১৪ আগস্ট) মোহাম্মদপুর থানাধীন এলাকায় এই চক্রের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন ফজলুল করিম নামে একজন ভুক্তভোগী। এই মামলায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি জানান, চক্রটি দেশের প্রথম সারির কিছু পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতো। মহাখালীতে স্বাস্থ্য বিভাগের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমিউনিটি কেন্দ্রের প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা ব্যবহার করা হতো বিজ্ঞাপনে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কিছু ই-মেল ঠিকানা দেওয়া থাকতো, যেগুলোতে আগ্রহীদের সিভি পাঠাতে বলা হতো।  

সিভি পাওয়ার পর চাকরিপ্রার্থীকে একটি এসএমএসের মাধ্যমে চাকরি হয়েছে বলে কনফার্মেশন পাঠাতো। এরপর বিকাশের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন বাবদ ১ হাজার ৯শ ৪০ টাকা নেওয়া হতো। টাকা পাঠানোর পর চাকরিপ্রার্থীকে এই প্রতারক চক্র একটি মানিরিসিট, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার এবং চূড়ান্ত নির্বাচিত ফরম ই-মেইল করে চাকরিপ্রার্থীকে পাঠাত। তাদের কথামতো চূড়ান্ত নির্বাচিত ফরম পূরণ করে প্রতারকদের দেওয়া ই-মেইলে ফিরতি মেইল করতে হতো চাকরিপ্রত্যাশীদের। এরপর ডিজিটাল আইডি কার্ড দেওয়া হবে বলে জানাতেন প্রতারকরা।  

বিনামূল্যে ল্যাপটপ ও মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট দেওয়া হবে সেজন্য দ্বিতীয় দফায় আরো ৪ হাজার ৮০ টাকা দাবি করে চক্রটি।  

আবারো টাকা পাঠানোর পর চাকরিতে যোগদানের জন্য চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। একপর্যায়ে ওই নাম্বারে আর সংযোগ পাওয়া যায় না। ততক্ষণে ভিকটিম বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন।

সারোয়ার জাহান বলেন, তারা এ পর্যন্ত কতজনের সঙ্গে প্রতারণা করেছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য না পাওয়া গেলেও প্রতারকদের দুটি বিকাশ নাম্বারে গত তিন মাসে ১২ লাখ টাকা এসেছে। যা থেকে ধারণা করা যায় তারা কত মানুষকে প্রতারিত করেছে।  

সরকারি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পত্রিকায় বিজ্ঞাপন শাখার কেউ এই প্রতারণায় জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২১
পিএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।