ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ মাঘ ১৪৩১, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘বসুন্ধরার দেখানো পথে যেন অন্য প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসে’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২১
‘বসুন্ধরার দেখানো পথে যেন অন্য প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসে’ ছবি: বাংলানিউজ

নাটোর: শুভ খান। অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

জীবনের সবচেয়ে সংকট সময়টা পার করছেন। গেল ডিসেম্বর মারা গেছেন শুভর বাবা। মা গৃহিণী। পরিবারে উপার্জনক্ষম একমাত্র বড় বোন। তিনি মাস্টার্সে পড়ছেন। টিউশনি করে মাসে ৭-৮ হাজার টাকা আয় করেন। তা দিয়েই টানাপোড়েন জীবন-যাপন করছেন শুভর পরিবার।  

সোমবার (১৬ আগস্ট) বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয় তাদের।  

সহায়তা পেয়ে শুভ বলেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার পরে আমরা খুব অসহায় হয়ে পড়েছি। আমার বড় বোন টিউশনি করে যে টাকা পান, তা দিয়েই আমরা চলি। আর মাঝে মধ্যে আত্মীয়রা কিছু সাহায্য করেন। আজকে আপনাদের সাহায্য দিয়ে কিছু দিন চলতে পারবো। আপনাদের ধন্যবাদ আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। ’

আরেক উপকারভোগী মো. কফের। জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। কাচের খেলনা, অ্যালবাম বানিয়ে মেলায় বিক্রি করতেন। কিন্তু গত দু’বছর ধরে কোনো মেলা হচ্ছে না। তাই তার বিক্রিও কমেছে কয়েকগুণ। এখন সপ্তাহে ৪০০-৫০০ টাকা আয় করেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এই আয়েই চলছে তার মানবেতর জীবন-যাপন।  

বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা পেয়ে কফের বলেন, ‘আমাগর অসহায় দিনে আপনারা সাহায্য করলেন খুব ভালো হইলো। বসুন্ধরাক যেন আল্লাহ হায়াত দারাজ করে। গুণার খাতা মাফ করে। সুখে রাখে। ’

সোমবার নাটোর সদর উপজেলায় তাদের মতো আরও ৪০০ অসহায়, হকার ও পরিবহন শ্রমিক পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় প্রত্যেক পরিবারকে ১০ কেজি চাল, তিন কেজি করে ডাল ও আটা দেওয়া হয়। জেলার শংকর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

বসুন্ধরা গ্রুপের দেখানো পথে যেন অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসে এমন আশা ব্যক্ত করে নাটোর জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ ও কালের কণ্ঠ শুভসংঘের আজকের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা আশা করি বসুন্ধরা গ্রুপ যে মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়েছে, তা আরও সম্প্রসারিত হবে। আমাদের যারা কষ্টে রয়েছেন, কর্মহীন রয়েছেন তাদের জন্য এই খাবার কিছুটা হলেও কষ্ট লাঘব করবে। করোনা যেভাবে কমছে, আশা করি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবো। বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য আপনারা শুভকামনা রাখবেন।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা বলেন, করোনা রোধে কঠোর বিধিনিষেধ পরিচালনের সময় অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এই কঠিন সময়ে যখন মানুষের খাদ্য প্রয়োজন সেই সময়ে বসুন্ধরা গ্রুপ ও কালের কণ্ঠ শুভসংঘ যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী। যারা সাধারণ মানুষ এই সময়টা কর্ম করতে পারেনি, তাদের জন্য এই সহায়তা ভালো কিছু। যেই সময় অসহায় মানুষের যেটা প্রয়োজন বসুন্ধরা গ্রুপ তখন সেই উদ্যোগ নিচ্ছে। তাই আমি তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।

খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে আরও উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন, শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শরীফ মাহ্দী আশরাফ জীবন, নাটোর জেলা শাখার সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সুষ্ময় দাসসহ সোহেল রানা, শিশির কুমার, প্রান্ত শীল, বর্ষা খতুন, সাজেদুল ইসলাম, মাহতিম রাসেল, বন্যা খাতুন, তমা ভট্টাচার্য, মহিমা খাতুন, ইরিন, রায়হান, রানা খান।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।