ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের সামনে বন্যার পানি, ভোগান্তি চরমে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২১
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের সামনে বন্যার পানি, ভোগান্তি চরমে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: উজান থেকে বয়ে আসা বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেল না আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি-ঘরগুলো। গত এক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়তে থাকা এবং প্রকল্পের বাড়িগুলো নিচু জায়গায় হওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর শতাধিক বাড়ি-ঘরের উঠানে পানি প্রবেশ করেছে।

বন্যার পানির কারণে চলাফেরায় সমস্যা হওয়ায় সেখানকার দরিদ্র ও অসহায় বসবাসকারীরা অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের পাগলা নদীতে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় কানসাট ব্রিজের উত্তর-পশ্চিম কোনে অবস্থিত নয়টি বাড়ির উঠানে পানি উঠেছে। সেখানে বাড়িতে পানি থাকা সত্ত্বেও একমাত্র ওই বাড়িটি সম্বল হওয়ায় পানির উপরে বসবাস করছেন তারা। তবে অতিরিক্ত পানি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পানি ঘরে ঢোকার আগেই নিজের আসবাবপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন তারা।

এদিকে মনাকষা ইউনিয়নের শ্যামপুর ভবানী এলাকায় ৩৯টি বাড়ির উঠানে ও আশেপাশে বন্যার পানি প্রবেশ করায় নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত বলে সেখানে বসবাসকারী একরামুল হকসহ ৭-৮ জন নারী পুরুষ জানান। তারা বলেন, বাড়ির পাশে আবর্জনার স্তুপের কারণে এবং বন্যার পানিতে সেসব আবর্জনা ডুবে যাওয়ায় গন্ধে সেখানে বাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘরের বাইরে বন্যার কারণে তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

তারা আরও বলেন, যাদের অন্য জায়গায় যাওয়ার সুযোগ আছে তারা চলে যেতে পারলেও কয়েকটি পরিবার এখনও এখানেই অবস্থান করছে।

অপরদিকে, ভকত (ডোম সম্প্রদায়) এর জন্য বরাদ্দকৃত হুমায়ূন রেজা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে আটটি বাড়ির চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে বসবাসকারী আপন ডোম, তার স্ত্রী, তার চাচাতো ভাই কৃষণা ডোম, ঝন্টু, তার স্ত্রীসহ তারা প্রায় সকলেই জানায়, বন্যার পানি প্রবেশ করায় এখানে বাস করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমরা মনাকষা বাজারে আশ্রয় নিবো বলে চিন্তা করছি। মনাকষা বাজার সংলগ্ন ৯টি বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ না করলেও বাড়ি আশপাশ ও উঠানে বর্ষার পানি জমায় বাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মহিলা বাংলানিউজকে জানান, কয়েকদিনের মধ্যে বর্ষার পানি ও বন্যার পাানি একত্রিত হয়ে যাবে। তখন এখানে বাস করা যাবে না। তার উপর আবার মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ এর মতো পাশে থাকা ময়লার স্তুপের দুর্গন্ধ, বৃষ্টির পানিতে ময়লা আমাদের ওঠানে এসে জীবনকে আরও দুর্বিসহ করে তুলেছে।

বাড়ি এলাকায় পানি প্রবেশ করেনি দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাকিব আল রাব্বী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধীনে বাড়িগুলো পরিদর্শন করে যাচ্ছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলোতে বন্যার পানি এখনো প্রবেশ করেনি। ত্রাণের ব্যবস্থায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে কোনো ব্যক্তিই যেন কোনো ধরনের কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখছি। যেগুলো বাড়ির নিচে আছে সেগুলোতে মাটি ভরাট করার চেষ্টা চলছে। মনাকষা বাজার সংলগ্ন ময়লা আবর্জনা খুব শিগগিরই দূর করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।