ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতি কলড্রপে ১ মিনিট কল ফেরত পাচ্ছে গ্রাহক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২১
প্রতি কলড্রপে ১ মিনিট কল ফেরত পাচ্ছে গ্রাহক

ঢাকা: প্রতি কলড্রপের জন্য গ্রাহককে এক মিনিট করে কল ফেরত দেওয়ার বিধান চালু রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ‘টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম’ বিষয়ে অনলাইন প্লাটফর্মে গণশুনানিতে এ তথ্য জানানো হয়।

রোববার (২২ আগস্ট) বিকেলে শুনানিতে গ্রাহকরা টেলিযোগাযোগ সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যেসব সমস্যার সুম্মখীন হয়েছেন তা তুলে ধরেন এবং কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা ক্রমান্বয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দেন।

গণশুনানি কমিটির সভাপতি ও বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার স্বাগত বক্তব্য দেন।

গণশুনানিতে মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান যথা- কলড্রপ ও বিভিন্ন প্যাকেজ (ভয়েস, ডাটা বান্ডল) এর মূল্য এবং ইন্টারনেট সেবা সংক্রান্ত অভিযোগ, প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি, মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য টেলিকম সেবাপ্রদানকারী লাইসেন্সিদের সেবা সম্পর্কিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত ছিল।

প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী এই গণশুনানির প্রশ্নপর্বে তানজিল হাসান নামে একজন গ্রাহক জানতে চেয়েছেন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি এবং অসহনীয় কলড্রপের প্রতিকারের বিষয়ে। জবাবে কমিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রি. জে. এহসানুল কবির বলেন, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটররা প্রতি জেলায় পয়েন্ট অব প্রেজেন্স (পপ) বসালে ব্রডব্যান্ড সেবার গতি বাড়বে এবং দুই বা ততোধিক কলড্রপের ক্ষেত্রে প্রতি কলড্রপের জন্য গ্রাহককে ১ মিনিট করে কল ফেরত দেওয়ার বিধান চালু রয়েছে।

নেটওয়ার্ক দুর্বলতার কারণে টেলিটকের কল এবং ডাটা ব্যবহার করা যায় না বলে অভিযোগ করেন শরীফুল ইসলাম নামে এক গ্রাহক। জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, টেলিটকের মান উন্নয়নে সরকার ইতোমধ্যে ২ হাজার ২০৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে এবং এটি বাস্তবায়ন হলে সেবার মান বাড়বে।

অবৈধ ফোন বন্ধের বিষয়ে আবুল আযম নামে এক গ্রাহকের প্রশ্নের জবাবে স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রি. জে. মো. শহীদুল আলম জানান, বিভিন্ন উপায়ে দেশে অবৈধ সেট আসছে বিধায় ন্যাশনাল আইডেনটিটি ইকুইপমেন্ট রেজিস্টার করা হয়েছে। প্রতিদিন ১ লাখের বেশি সেট এনইআইআর-এ যুক্ত হয়, যার মধ্যে ৩০ ভাগ অবৈধ হ্যান্ডসেট। অক্টোবরে এনইআইআরের পরীক্ষামুলক সেবা বন্ধ হওয়ার পর অবৈধ সেটের বিষয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গণশুনানির শেষভাগে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর শিকদার সার্বিক বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন। ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের প্রতিষ্ঠান ‘ওকলা’ থেকে প্রকাশিত সূচকে ইন্টারনেট গতিতে বাংলাদেশ ১৩৭ দেশের মধ্যে ১৩৫তম। এমন প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চান এক গণমাধ্যমকর্মী।

জবাবে বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান, বিষয়টি নিয়ে একটি একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে কিসের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটি এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এর সম্পূরক উত্তর হিসেবে সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রি. জে. মো. নাসিম পারভেজ স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান পৃথিবীতে অষ্টম মর্মে সবাইকে অবহিত করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান জনাব সুব্রত রায় মৈত্র, স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার প্রকৌশলী এ কে এম শহীদুজ্জামান, প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসাইন, লিগ্যাল এবং লাইসেন্সিং বিভাগের মহাপরিচালক আশীষ কুমার কুন্ডু, অর্থ হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের মহাপরিচালক মো. মেসবাহুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের পরিচালক ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশন্স বিভাগের কমিশনার প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, টেলিযোগাযোগ খাতের সম্প্রসারণের ফলে বিশ্বে আজ হাতের মুঠোয় এবং প্রতিনিয়ত এর গুরুত্ব বাড়ছে। প্রতিটি গণশুনানির আয়োজন যেকোনা প্রতিষ্ঠানের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ায়।

বাংলাদেশ সময়: ০২০১ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২১
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।