ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ চৈত্র ১৪৩১, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২৪ ফেব্রুয়ারি ঐতিহ্যবাহী যশোর ইনস্টিটিউটের নির্বাচন

তৌহিদ জামান, জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১২
২৪ ফেব্রুয়ারি ঐতিহ্যবাহী যশোর ইনস্টিটিউটের নির্বাচন

যশোর: ২৪ ফেব্রুয়ারি যশোর ইনস্টিটিউট পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন। তিন বছর পর পর এই নির্বাচন হয়ে আসছে।

ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনকে ঘিরে যশোরের বিশিষ্টজনদের মধ্যে এখন ব্যাপক  তোড়জোড় চলছে।

নির্বাচনে বৈতরণী পার হতে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। একটি হচ্ছে সদ্য বিদায়ী ‘সংস্কার ও উন্নয়ন সমিতি’ এবং অপরটি ‘পুনরুত্থান পরিষদ’। ৩ হাজার ৫৭ জন ভোটারের কাছে তাই চলছে দিনরাত দু’পক্ষের ভোটভিক্ষা। সেইসঙ্গে রয়েছে তাদের নানা অঙ্গীকার।

ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে যখন ইউরোপ-আমেরিকাতে গণপাঠাগার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন প্রবল হয়, ভারত উপমহাদেশেও সে আন্দোলন প্রসার লাভ করে। তারই ফসল যশোর পাবলিক লাইব্রেরি। যা ১৮৫৪ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে দেড় শতাব্দীকালের লাইব্রেরির পাশাপাশি যশোর টাউন হল (আলমগীর সিদ্দিকী হল), টাউন ক্লাব, টাউন হল ময়দান (মুন্সি মেহেরুল্লাহ ময়দান), স্বাধীনতা মঞ্চ বা উন্মুক্ত মঞ্চ, নিউ আর্য থিয়েটার (ইনস্টিটিউট নাট্যকলা সংসদ), বি. সরকার মেমোরিয়াল হল (তসবীর মহল), ইনস্টিটিউট প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিশ্বনাথ লাইব্রেরি হল, বই ব্যাংক (আঞ্চলিক কেন্দ্রীয় বই ব্যাংক) ও পাবলিক লাইব্রেরির শিশু কিশোর বিভাগের মাধ্যমে সমগ্র প্রতিষ্ঠানটি ১৯২৮ সালে যশোর ইনস্টিটিউট নাম ধারণ করে।

‘শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিশালায়তন জমির ওপর অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম দিনকে দিন হ্রাস পাচ্ছে। শিক্ষা, সংস্কৃতি আর কৃষ্টিচর্চার তীর্থস্থান এই প্রতিষ্ঠানে এখন বিদ্যাচর্চার চেয়ে তাসখেলাকে (ক্রয় হিসেবে)  প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে’-এ অভিযোগ পুনরুত্থান পরিষদের।

তারা দাবি করছে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে তিনবছরের মধ্যে ২০১১ সালে পাঠাগারের জন্য বই কেনা হয়েছে মাত্র সাত হাজার একশ উনপঞ্চাশ টাকার। অথচ, একইবছর খেলার আসরে তাসক্রয় করা বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ত্রিশ হাজার আটশ’ টাকার। যা বিশ্বাস করেন না খেলোয়াড়রা।

পরিষদের নেতা বেনজীন খান বাংলানিউজকে জানান, ‘সদ্যবিদায়ী কমিটি এ ধরনের বহু অনিয়ম করেছেন, যা যশোরের ঐতিহ্য আর অহঙ্কারের প্রতীক ইনস্টিটিউটকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে। ’

তিনি অনিয়মের সেই ধারা ভাঙতে সচেতন ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।

এদিকে পুনরুত্থান পরিষদের এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সংস্কার ও উন্নয়ন সমিতি।
এই প্যানেলের সদস্য, বিদায়ী কমিটির (লাইব্রেরি কমিটির সহ-সম্পাদক) নেতা মোস্তাফিজুর রহমান কাবুল বাংলানিউজকে বলেন, ‘বই কেনার যে টাকার অঙ্কের কথা বলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। ’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে অনেকেই চটকদার সব বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বিগত কমিটির উন্নয়নের ধারায় পরিতৃপ্ত না হতে পেরে এসব করা হচ্ছে। ’

প্রতিষ্ঠানে নতুন সদস্য না করার অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘পুনরুত্থান পরিষদের দু’নেতার আপত্তির কারণেই তা স্থগিত করা হয়। ’

তিনি বিদায়ী কমিটির উন্নয়নমূলক কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরে তা অব্যাহত রাখতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান।

পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি (পদাধিকারবলে) যশোরের জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনকে সামনে রেখে দু’প্যানেলই ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। ’

শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংস্কার ও উন্নয়ন সমিতি প্যানেলে রয়েছেন শেখ রবিউল আলম, আবু সালেহ তোতা, আব্দুর রহমান কিনা, রওশনআরা রাসু, অ্যাডভোকেট আবদুল গফুর, এমদাদুল হক সাচ্চু, শ্রাবস্তী আহম্মদ, মীর জাহিদ হোসেন মিটু, হাচিনুর রহমান, সানোয়ার আলম খান দুলু, মোস্তাফিজুর রহমান কাবুল, অধ্যক্ষ পাভেল চৌধুরী, শেখ মকসিমুল বারী অপু, অ্যাডভোকেট প্রশান্ত দেবনাথ, অধ্যক্ষ মুস্তাক হোসেন শিম্বা, অধ্যাপক সহিদুল আলম সদু, অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু, অ্যাডভোকেট আবু সেলিম রানা, কাসেদুজ্জামান সেলিম ও অ্যাডভোকেট শহীদ আনোয়ার।

অপরদিকে, পুনরুত্থান পরিষদের মনোনীতরা হলেন ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, এমএ মতিন সিদ্দিকী, শেখ মো. আক্তারুজ্জামান, একরাম-উদ-দ্দৌলা, খন্দকার দাউদ হোসেন, এএম মহিউদ্দিন লালু, অ্যাডভোকেট চুন্নু সিদ্দিকী, শফিকুল আলম কলি, মহিউদ্দিন আহমেদ মইন, জয়ন্ত কুমার বিশ্বাস, রফিকুর রহমান তোতন, এম. মফিজুর রহমান হিমু, ডা. আবুল বাশার, ইলিয়াস বাবু, হামিদ চাকলাদার ইদুল, ফেরদৌসী বেগম, ফজলে রাব্বী মোপাশা, আব্দুর রাজ্জাক, বেনজীন খান ও অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ ইসহাক।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।