জামালপুর: জামালপুরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও নিচু এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্ট এলাকায় ১৬ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানিও দ্রুত বাড়ছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল মান্নান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে দ্রুত পানি বাড়ার কারণে জামালপুরের মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জের নিচু এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
দ্রুত পানি বাড়ার ফলে খুব কম সময়ের মধ্যে বন্যা পরিস্থিত ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে বলে অনুমান করছে স্থানীয়রা। এদিকে জামালপুরের নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল ৬০০ মিটার পাকা সড়ক। চিকাজানী ইউনিয়নের দেওয়ানগঞ্জ টু খোলাবাড়ি সড়কের মণ্ডল বাজারের অংশটি গত কয়েকদিনের অব্যাহত ভাঙনে সম্পূর্ণ নদীগর্ভে চলে যায়। পৌর শহরের সঙ্গে এই অঞ্চলের সড়ক পথের যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। বাহাদুরাবাদ নৌ থানা মোন্নে বাজার ফারাজিপাড়া, কাজলা পাড়া চর বাহাদুরাবাদসহ প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ এই পথে যাতায়াত করে। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি গত দুই বছর থেকেই নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে ছিল। ২০২০ সালেপ্রথম ভাঙন শুরু হয়। এবার বর্ষা মৌসুম আসলে নদীভাঙন শুরু হলে বস্তাএবং বাঁশ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিলেও স্থায়ী ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গত ২০ আগস্ট রাতে বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সড়কটি পুরাপুরি নদীগর্ভে চলে যায়।
চিকাজানী ইউপি চেয়ারম্যান মোমতাজ উদ্দিন বলেন, অনেক চেষ্টা করেওকিছু করতে পারিনি। এলজিইডি আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠেলাঠেলিতেইসড়কটির এই অবস্থা।
উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান হোসেন বাংলানিউজকে জানান, দুই বছর থেকে সড়কটি নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে। গত বছর আমি ব্যক্তিগতভাবে ৭০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। স্থানীয়রা সেই টাকা দিয়ে বাঁশ আর বালুর বস্তা ফেলে প্রতিরোধ করেছিল। এ বছর হঠাৎ করে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দুদিনের ব্যবধানে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল সড়কটি।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম আব্দুল্লাহ বিন রসিদজানান, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। তারা সড়কটি মেরামতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ জানান, গত বছর থেকে সড়কটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়েছে। বাজেট না থাকায় কিছুই করা সম্ভব হয়নি। এখনো সড়কটি নিয়ে কাজ করার মতো অর্থ বরাদ্দ নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২১
আরএ