ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

কুড়িগ্রামে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

ফজলে ইলাহী স্বপন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২১
কুড়িগ্রামে ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

কুড়িগ্রাম: ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে স্বল্প মেয়াদে একটি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলায় পানি বেড়েছে ১৯ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রে বেড়েছে ১৫ সেন্টিমিটার। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার দেড় শতাধিক চর ও নদীসংলগ্ন চরগ্রাম এলাকা প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়েছে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে চরাঞ্চলের স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা।  

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলার নয়টি উপজেলায় প্রায় সাত হাজার হেক্টর আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন প্রকট আকার ধারণ করায় ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও গঙ্গাধরের ভাঙনে বিভিন্ন এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে।  

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা, যাত্রাপুর, পাঁচগাছি, ভোগডাঙা ও ঘোগাদহ ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে বন্যার পানি ঢুকে ৭০ শতাংশ আমন ক্ষেত এখন পানির নিচে। সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের রাঙামাটি এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে রাঙামাটি, কাগজীপাড়া, হলোখানা, বড়লই, সারডোবসহ ১০টি গ্রামের কয়েকশ’ হেক্টর আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে।

চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়ে চারটি ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্লাবিত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে রমনা ইউনিয়নের বাসন্তিগ্রাম, টোনগ্রাম, চিলমারী ইউনিয়নের কড়াই বরিশাল, মনতোলা, শাখাহাতী, নয়ারহাট ইউনিয়নের ঠাকুরের চর, উত্তর খাউরিয়া, অষ্টমীরচর ইউনিয়নের মুদাফৎ কালিকাপুর ও নটারকান্দি। বাড়ি-ঘরে পানি ওঠায় লোকজন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাইবো বাঁধসহ অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে।  

রাজারহাট উপজেলার কিং ছিনাই গ্রামের ধরলার ভাঙনে গত এক সপ্তাহে ৩০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। ধরলা অববাহিকার মেকলি, কিং ছিনাই, জয়কুমর, সারডোব, জগমোহনের চর, তিস্তার গতিয়াশাম, খিতাবখা, রামহরি, হাবুরহেলান, ঠুটা পাইকর, হোকডাঙা, চর বজরাসহ ৩০টি পয়েন্টে নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের উজানে ভারতের কয়েকটি রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বেড়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দু’একদিনের মধ্যে ধরলার পানি কমতে শুরু করবে। তবে ব্রহ্মপুত্রের পানি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে স্বল্প মেয়াদে একটি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২১
এফইএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।