ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বেদে পল্লীর শিশুদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

শাকিল আহমেদ, স্টাফ ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২১
বেদে পল্লীর শিশুদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত

ঢাকা: বেদে সম্প্রদায় বাংলাদেশের একটি বিস্ময়কর পেশাভিত্তিক জনগোষ্ঠী। তাদের জীবনযাপন, আচার আচরণ সব কিছুই চলছে ভিন্ন রীতিতে।

এ সম্প্রদায়ের বাস নদীর পাড়ে বা কোনো পতিত জায়গায়।

এ জনগোষ্ঠীকে বেশি দেখা যায় বিক্রমপুর এলাকায়। শুধু বিক্রমপুর কথাটা বললে ভুল হবে, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকায় দক্ষিণ বাঘাপুর এলাকায় ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশেই তাদের বসবাস।

প্রায় বিশ বছর ধরে প্রায় চল্লিশটি পরিবার দক্ষিণভাগ বাঘাপুর এলাকার বেশিরভাগ পতিত জায়গা দখল করে আছেন।

দক্ষিণাঞ্চলের নদী ভাঙনের কারণে এদের জীবনকে করে তুলেছে যাযাবর। তবে বেশির ভাগই বেদে এক জায়গায় বেশি দিন বসবাস করে না। তারা বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী ভাবে মানবেতর জীবনযাপন করে।  

প্রবাদ আছে, একজন শিক্ষিত মা দিতে পারে একজন শিক্ষিত জাতি। শিশুরা বাবা-মার কাছে ছোট থেকেই শিক্ষা নেয়। বেদে পল্লীতে শিশুরা পূর্বপুরুষের পেশাগত দিকগুলোই শিখেছে। অভাব অনটনে বেদে পল্লীতে অশিক্ষিত অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত।

জীবন-জীবিকার তাগিদে বেদেরা ছুটে বেড়ায় এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়। পেশাগত কারণে বেদেরা যেমন এক এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করে না। ছুটে বেড়ায় এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় তাই শিশুদের পড়ালেখার সুযোগ হয় না। তাই তারা (শিশুরা) বাবা-মায়ের কাছ থেকে সাপ খেলা দেখানো, তাবিজ কবজ বিক্রি করা শিখছে।

দক্ষিণভাগ বাঘাপুর এলাকার বেদে মো. আজাহার (৫২) জানান, আমি এ বেদে পল্লীতে প্রায় ছয় বছর ধরে আছি। অর্থের অভাবে মেয়েদের লেখাপড়া করাতে পারিনি তাই বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। আমার স্ত্রী আমেনা বেগম দুই/তিন বছর ধরে অসুস্থ। দুইটা মেয়ে ছিল, তাদের বিয়ে দিয়েছি। এখন ওরা ওদের মত আছে।

তিনি আরো বলেন, আমার স্ত্রী আগে গ্রামে গ্রামে ঝাড়ফুঁক করতো, শিঙা লাগানো, তাবিজ কবজ বিক্রি করতো। এখন অসুস্থ থাকার কারণে তাও করতে পারছে না। বেদে পল্লীর পাশেই এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে সে খাবার দিয়ে যায় তাতেই কোনোমতে বেঁচে আছি। টাকার অভাবে অসুস্থ স্ত্রীকে চিকিৎসা করাতে পারছি না।

আরেক বেদে সোহাগ বলেন, আমার স্ত্রী হাটে বাজারে ঘুড়ে, শিঙা লাগানো, তাবিজ বিক্রি করে যেটুকু অর্থ উপার্জন করে তা দিয়েই সংসার চালাই আমি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২১
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।