শ্রীপুর(গাজীপুর): গাজীপুরের শ্রীপুর রেঞ্জের আওতায় বনবিভাগের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল শিমলাপাড়া বনবিট। ওই বিটে প্রায় এক বছর হলো দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বিট কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই।
চলিত বছরে বেদখলে থাকা প্রায় ১৫০ বিঘা (৫০ একর) বনভূমি দখলবাজদের কবল থেকে উদ্ধার করে মিশ্র বিভিন্ন জাতের চারা রোপণ করে নতুন বনায়ন বাস্তবায়ন করেছেন।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) এই বিটের তৃর্ণমূলে ভরপুর সবুজে ঘেরা মিশ্র সামাজিক বনায়নে প্রবেশ করে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রোপণকৃত হাজার হাজার চারা দ্রুত বেড়ে উঠছে।
আরো অনুসন্ধানে পাওয়া যায়, প্রায় ৪০ বছর ধরে বেদখলকৃত অনেক জমিতেই এখন বিভিন্ন প্রকার মিশ্র বনায়নে সাজানো হয়েছে। আর এইসব বনায়নে উপকৃত হয়েছেন এলাকার শত শত নিরীহ দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ। ১৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মো. আব্দুল হাই শ্রীপুর রেঞ্জের শিমলাপাড়া বিট কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই প্রতিনিয়ত দস্যুদের সঙ্গে যুদ্ধ করে নানামুখী চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় অসাধ্য কাজ সাধন করেছেন তিনি।
শিমলাপাড়া বনবিট অফিস সূত্রে জানা যায়, ওই ৫০ একর জমির মধ্যে শিমলাপাড়া, সিংগারদিঘী, আক্তাপাড়া, শিরিমঝগুড়ী, বেলতুলি, ফুলানিরসিট, বারতোপা, সিংদিঘী, বদনীভাংগা বিস্তীর্ণ এলাকায় হাজার হাজার গাছের চারা উদ্ধারকৃত জমিতে শোভা বর্ধন করছে। তা রোপণ করে সামাজিক ও মিশ্র বনায়ন করে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও পশু পাখির খাদ্যের চাহিদা মেটাতে বনের জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফলের চারা যেমন, আমলকি, বহেরা, ছফেদা, লটকন, কাজুবাদাম ও চালতাসহ বিভিন্ন প্রকার ফলের চারা রোপণ করা হয়েছে।
শিমলাপাড়া বিট কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই বাংলানিউজকে জানান, শিমলাপাড়া বিটে মোট সাড়ে চার হাজার একর বনের জমি রয়েছে। চলিত বছরে কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় প্রায় ১৫০ বিঘা সরকারি বনভূমি উদ্ধার করে পশুপাখির খাদ্যের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন প্রকার মিশ্র ফলদ, ঔষুধি গাছ রোপণ করে বাগান সৃজিত করা হয়েছে। ইতোপূর্বে এই বিটের কর্মকর্তারা বেদখলকৃত জমি উদ্ধারে গেলে দস্যুদের সঙ্গে বাগ-বিতণ্ডার ঘটনাও ঘটে।
তিনি আরও বলেন, শিমলাপাড়া বিট একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিট। আমি ঝুঁকি নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। দখলবাজ যতই বড় হোক আমি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাব। বনভূমি উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মীর মুহাম্মদ বজলুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, শিমলাপাড়া বিট অনেক বড় প্রায় সাড়ে চার হাজার একর বনের জমি রয়েছে। তবে যে হারে জনবল থাকার কথা সে হারে নেই। প্রতিনিয়ত আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। যে সব জমি বেদখল রয়েছে ওই সব জমি উদ্ধার করে বিভিন্ন প্রকার মিশ্র গাছের চারা রোপণ করে সামাজিক বনায়ন করে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
ঢাকা বনবিভাগের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) শ্রীপুর রেঞ্জ রানা দেব বাংলানিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জবর দখলে থাকা বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত বনভূমিতে হাজার হাজার বিভিন্ন প্রকার চারা রোপণ করা হয়েছে। চারাগুলো বড় হলে গভীর অরণ্যের সৃষ্টি হবে। এই উদ্ধার অভিযান নিয়মিত চলছে। যেসব জমি জবর দখলে রয়েছে তা পর্যায়ক্রমে উদ্ধার করে বনবিভাগের আওতায় এনে পূর্বের মত সবুজময় গভীর বনে গড়ে তোলা হবে। বনের জমি উদ্ধারে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২১
আরএ