ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বারোমাসি মধুমঞ্জরি

মো. রাজীন উদ্দিন চৌধুরী, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২১
বারোমাসি মধুমঞ্জরি ছবি: রাজীন উদ্দিন চৌধুরী

ঢাকা: মধুমঞ্জরী বা মধুমালতী। কমব্রেটেসিয়া পরিবারে অন্তর্ভুক্ত বহুবর্ষজীবী লতানো গাছ।

ইংরেজিতে এর নাম চীনা মধুচক্র (Chinese honeysuckle) বা রেঙ্গুন লতা (Rangoon creeper)। হিন্দি নাম রঙ্গন-কা-বেল। বোম্বে অঞ্চলে ডাকা হয় বারমাসী, লাল চামেলী নামে।

মধুমঞ্জরির আদি বাসস্থান দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইন্দো-মালয়েশিয়া। ফিলিপাইন, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড—এসব ক্রান্তীয় অঞ্চলে এ গাছ ভালো জন্মে।

কেউ কেউ মনে করেন, এটি মালয় দেশের গাছ। সেখান থেকে ভারত বা বাংলাদেশে এনে লাগানো হয়েছে। তবে মধুমঞ্জরী আমাদের দেশে বাগান সজ্জায় এমনভাবে জড়িয়ে গেছে, এখন তাকে আর ভিনদেশি ভাবার উপায় নেই।


মধুমঞ্জরীর লতা খুব শক্ত, ধূসর রঙের। কয়েক বছর হয়ে গেলে মোটা হয়ে মুচড়ানো দড়ির মতো হয়। খসখসে সবুজ রঙের পাতাগুলো বিপরীত দিকে সাজানো থাকে। পাতা আয়তকার, ডিম্বাকৃতি ও অগ্রভাগ সরু হয়। পাতার কিনারা কখনো হালকা ঢেউ খেলানো এবং একটু খসখসে।  

মধুমঞ্জরী ফুল থোকায় থোকায় ফোটে। ফুলের রঙ সাদা থেকে ধীরে ধীরে গোলাপী ও শেষে লাল হয়। ফুলের পাপড়ি পাঁচটি। ফুলে মৃদুসুগন্ধ আছে। বিচিত্র রঙের জন্য এই ফুল প্রজাপতি আর মৌমাছিদের খুব প্রিয়।


মধুমঞ্জরী বারোমাসি ফুল গাছ। সারা বছর কিছু দিন পরপর ফুল ফোটে। বংশবৃদ্ধি মূলত অঙ্গজ। মধুমঞ্জরীর গোড়া এবং শেকড় থেকে নতুন গাছ গজায়। লতা কেটে মাটিতে পুঁতলেও চারা হয়। খুব ক্বচিৎ ফল হয়।

মধুমঞ্জরী কষ্টসহিষ্ণু গাছ। সহজে মরে না। ইট কাঠের ঢাকা শহরে অনেক বহুতল ভবনের গা বেয়ে নিচ থেকে ছাদ পর্যন্ত এই গাছকে শোভা ছড়াতে দেখা যায়।  

কুঞ্জ তৈরির জন্যে মধুমঞ্জরী আদর্শ গাছ। এটি শুধু একটি দৃষ্টিনন্দন ফুল নয়, ভেষজ চিকিৎসাতেও ব্যবহৃত হয়। এর বীজ পরজীবীর জন্য বিষাক্ত এবং পাচনতন্ত্রে পরজীবীকে হত্যা করে।


চীনের স্থানীয় চিকিৎসা পদ্ধতিতে মূল, বীজ বা ফলের নির্যাস অ্যান্টিহেলমিন্টিক হিসেবে পরজীবী কীট নির্মূল করতে বা ডায়রিয়া দূরীকরণের জন্য ব্যবহার করা হতো বলে জানা যায়। ফলের নির্যাস গারগলিংয়ের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে। নেফ্রাইটিসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মধুমঞ্জরীর ফল ব্যবহৃত হয়। জ্বরজনিত ব্যথার উপশমে ব্যবহার করা হয় পাতা। এছাড়া বাতজনিত চিকিৎসায় মধুমঞ্জরীর শিকড় ব্যবহৃত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।