ঢাকা: আগামী সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত দিয়ে অভিযান পরিচালনা করে যেসব ভবনের সেটব্যাক অবৈধ সেগুলো ভাঙার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।
শনিবার (২৮ আগস্ট) পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের কুলুটোলা এলাকার ৪৭/২ তনুগঞ্জ লেনে হেলে পড়া ছয়তলা ভবন ভাঙার কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদসহ রাজউক ও ডিএসসিসির অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকার দুই সিটিতে সাড়ে তিন হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ ভবন রয়েছে। এছাড়া আরও এক হাজার ভবন তদন্তাধীন রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, পুরান ঢাকাকে প্ল্যানে নিয়ে আসতে হলে এখানে কোনো বিল্ডিংয়ের অস্তিত্ব থাকবে না, সব ভেঙে ফেলতে হবে। এ জঞ্জাল কিন্তু একদিনে সৃষ্টি হয়নি। শত শত বছর ধরে হয়েছে। ঢাকার শুরুতে কিন্তু কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তবে ঢাকা যতো উন্নত হচ্ছে এসবও উন্নত হচ্ছে। আপনারা দেখতে পাবেন পুরান ঢাকার ওয়ারি, ধানমন্ডি, গুলশান, বারিধারা এসব এলাকার পরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে ভালোর দিকে গেছে।
পুরান ঢাকার ঘনবসতির মধ্যে যেসব ভবন রয়েছে, তাদের যে সীমাবদ্ধতা সেগুলো ঠিক রেখে ব্যবস্থা নিতে হবে উল্লেখ করে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, এ লক্ষ্যে রাজউক একটি প্রকল্প নিয়েছে। এ বিষয়ে এশিয়ান ডেভেলপমেন্টের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আমাদের আস্বস্ত করেছেন সহায়তার জন্য।
ঢাকার নতুন ভবনও নকশার বাইরে গিয়ে করা হচ্ছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত দেড় বা প্রায় দুই বছর করোনা থাকায় আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত বের হয়নি। এখন আবার নিয়মিত বের হচ্ছে। আমাদের ১৯টি টিম কাজ করছে। গত ১৫ দিনে এক কোটি টাকার বেশি জরিমানা করা হয়েছে। অবৈধ ভবন ভাঙার নির্দেশ দিয়েছি। সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব ভবন তারা নিজেরা না ভাঙলে, আমাদের নিজস্ব উদ্যোগে ভাঙা হবে। তবে সেই খরচ দিতে হবে ভবন মালিকদের। আমরা কাজ শুরু করব, আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) পর্যন্ত ১৭টি ভবন পরিদর্শন করেছি। এ কাজ অব্যাহত আছে। পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জরিমানা কিন্তু শেষ নয়, অবৈধ ভবন ভাঙতে হবে।
কীভাবে পুরান ঢাকাকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হবে জানতে চাইলে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ডিএসসিসিকে সঙ্গে নিয়ে আমরা একটা প্রকল্প নিয়েছি। এটা বাস্তবায়ন করতে পারলে তা একটা মডেল হবে। তবে আমাদের কাজ শুরু করতে হবে। আমরা দ্রুতই কাজ শুরু করতে চাই। আমাদের প্রথম কাজ হবে বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবনের পাশের রাস্তাগুলো বড় করা, সেটব্যাক ভেঙে ফেলা। ঐতিহ্যবাহী ভবন রক্ষা করা, যে ভবন রাখা যাবে না তা ভেঙে দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে আমরা একটা প্রকল্প দাঁড় করিয়েছি। আমাদের ড্যাপের পিডিকে দিয়ে কাজ করা হয়েছে। আশা করছি আমরা খুব দ্রুত এ কাজটি করতে পারবো।
চলতি বছরেই এটা সম্ভব হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদেন প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। এ বছরই একটি প্রকল্প পাস হবে। যেহেতু বৈদেশিক সাহায্য পুষ্ট প্রকল্প তারা আসবে, দেখবে, তারপর পাস হবে।
রাজউকের অভিযানে সেটব্যাক ভাঙার পরদিন থেকেই আবার নির্মাণ কাজ শুরু হয়, সে বিষয়ে আপনারা কী পদক্ষেপ নেবেন জানতে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিটা বাড়িতে গিয়ে তদারকি করার মতো অবস্থা আমাদের নেই। ভেঙে দেওয়ার পর যখন আবার নির্মাণ করা হয় তখন আমাদের খবর দেওয়া হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২১
জিসিজি/আরবি