ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

এক এসএমএসে ধরা পড়লো জাল সনদ বাণিজ্যের ৭ সদস্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২১
এক এসএমএসে ধরা পড়লো জাল সনদ বাণিজ্যের ৭ সদস্য

ঢাকা: সম্প্রতি নূর তাবাসসুম নামে এক এসএসসি পাস শিক্ষার্থীর মায়ের ফোনে একটি এসএমএস আসে। সেখানে জানানো হয়, তার মেয়ের এসএসসি সনদের নাম পরিবর্তন হয়ে নূর রিমতি হয়েছে।

অভিভাবকরা ওই শিক্ষার্থীর স্কুলে গিয়ে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করতে বলা হয়। শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে দেখেন এসএসসির পাশাপাশি তার পিএসসি, জেএসসির সনদের নামও পরিবর্তন হয়ে গেছে। পরে ভুক্তভোগী ওই পরিবার ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করে।

মামলাটি তদন্তের ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, রমনা ও চকবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে এর সঙ্গে জড়িত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারীসহ একটি চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তারা পরস্পরের যোগসাজশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দীর্ঘদিন যাবত জাল সনদ তৈরি ও সরবরাহ করে আসছিল।

গ্রেফতাররা হলেন— নূর রিমতি, জামাল হাসেন, এ. কে, এম মোস্তফা কামাল, মো. মারুফ, ফারুক আহম্মেদ স্বপন, মাহির আলমা ও আবেদ আলী। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ প্রবেশপত্র, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের নাম ও অনলাইন রেজাল্ট শিটের কপি জব্দ করা হয়।

শনিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, গ্রেফতার নূর রিমতি ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর সিটি মডেল কলেজ থেকে অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হয়। কিন্তু তার ইতালি যাওয়ার জন্য এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। জাল সনদ তৈরির জন্য সে তার মামা গ্রেফতার জামাল হোসেনের মাধ্যমে এ. কে. এম মোস্তফা কামালের সঙ্গে তিন লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন।

চুক্তি অনুযায়ী মোস্তফা কামাল শিক্ষা বোর্ডের দালাল চক্র মারুফ, মাহবুব আলম, ফারুক আহম্মেদ স্বপন ও আবেদ আজাদের সঙ্গে সমন্বয় করে নূর তাবাসসুমের সনদ সংক্রান্ত জেএসজি ও এসএসসি পাসের সকল তথ্য সংগ্রহ করে। এরপর তারা প্রথমে শিক্ষার্থীর বাবার নাম, মায়ের নাম সংশোধনের জন্য শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফরমেটে আবেদন করেন।

শিক্ষা বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টাকার বিনিময়ে শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটের রেজাল্ট আর্কাইভে নির্ধারিত ফরমেটে সংরক্ষিত কৃতকার্য প্রকৃত শিক্ষার্থী নূর তাবাসসুমের তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী নূর রিমাতির তথ্যসমূহ আপলোডের মাধ্যমে জাল সনদ তৈরি করে। পরবর্তীতে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে নেয়। এমনকি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটেও পরিবর্তিত শিক্ষার্থীর সংযোজিত তথ্য দেখায়।

এই প্রতারক চক্র ঢাকা শিক্ষা বোর্ডসহ অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, জন্ম তারিখসহ অন্যান্য তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংযোজন করে জাল সনদ তৈরির মাধ্যমে মোটা অংকের হাতিয়ে নিচ্ছিল। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২১
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।