কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় বন্যার পানি চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলগুলোতে স্থির থাকায় রোপা আমন ও শাকসবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া জেলায় ১৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলার দুই শতাধিক চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি অন্তত ৬০ হাজার মানুষ। গো-খাদ্যের সংকটে গবাদিপশু বাঁচাতে মানুষ পানিতে ডুবে থাকা জমি থেকে ঘাস সংগ্রহ করছে। প্লাবিত এলাকাগুলোতে এখন যোগাযোগের একমাত্র ভরসা নৌকা বা কলাগাছের ভেলা।
সোমবার (৩০ আগষ্ট) সন্ধ্যা ৬টায় ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বি এম আবুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়ার ফলে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় তার ইউনিয়নের প্রায় চার শতাধিক বাড়িতে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের সংকট তৈরি হয়েছে। লোকজন পানিতে ডুবে বিভিন্ন জায়গা থেকে গো-খাদ্য সংগ্রহ করছে। এছাড়া বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় স্বাভাবিক চলাচলে অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উমর ফারুক বাংলানিউজকে জানান, ধরলা নদী অববাহিকার পানিবন্দি মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকের ঘরে বন্যার পানি থাকায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে নৌকা বা কলাগাছের ভেলা ব্যবহার করতে হচ্ছে। পানিবন্দি এসব মানুষ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে রয়েছেন।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক বাংলানিউজকে জানান, বন্যার পানি নিম্নাঞ্চলে অবস্থান করায় রোপা আমন ধান ও শাকসবজি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত জেলায় ১৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এরমধ্যে রোপা আমন ১৫ হাজার ১১৫ হেক্টর, শাকসবজি ২৭০ হেক্টর ও বীজতলা ৯৫ হেক্টর।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, উজানের দিকে বৃষ্টিপাত নেই, সেইসঙ্গে উজান থেকে পানিও আসা কমে গেছে। তাই বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। দু’একদিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বাংলানিউজকে জানান, বন্যার্তদের জন্য নয় উপজেলায় ২৮০ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলায় ৩৬৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২১
এফইএস/আরবি