ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বিনা ভাড়ায় সরকারি বাসভবনে থাকেন নৈশপ্রহরী-গাড়ি চালকসহ ৪ জন!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১
বিনা ভাড়ায় সরকারি বাসভবনে থাকেন নৈশপ্রহরী-গাড়ি চালকসহ ৪ জন!

নাটোর: বরাদ্দ নেই কোনো সরকারি বাস ভবন। অথচ দীর্ঘদিন ধরে নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বিনা ভাড়ায় সরকারি বাসভবনে থাকেন নৈশপ্রহরী, গাড়িচালকসহ চারজন।

উপজেলা পরিষদের সরকারি বাসা বরাদ্দ কমিটির পক্ষ থেকে বার বার নোটিশ দেওয়ার পরেও ভাড়া পরিশোধ করেননি কেউ।

এমনকি বাসা ছাড়ার জন্য নোটিশ দিলেও তা তোয়াক্কা করছে না তারা। উপরোন্ত বছরের পর বছর বিনা ভাড়ায় বসবাস করায় সরকার হারাচ্ছেন লাখ টাকার রাজস্ব। এমন ঘটনা নিয়ে রীতিমত শুরু হয়েছে তোলপাড়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নৈশপ্রহরী, গাড়িচালকসহ চারজনের কেউ ৩ বছর, কেউ দেড় বছর, কেউ কেউ আবার ৩ ও ৬ মাস ধরে বিনা ভাড়ায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন সরকারি ভবনে। এদের মধ্যে উপজেলা কৃষি অফিসারের গাড়িচালক মো. সেলিম রেজা প্রায় ৩ বছর ধরে বিনা ভাড়ায় সরকারি বাসভবনের শাপলা ভবনের ৪ নম্বর ইউনিটে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী মো. মোতালেব হোসেন মাধবী ভবনের ১ নম্বর ইউনিটে ৩ মাস ধরে রয়েছেন। ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা, সাবেক উপজেলা টেকনিশিয়ান রফিকুল ইসলাম চামেলি ভবনের ২ নম্বর ইউনিটে গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে রয়েছেন। সমাজসেবা অধিদপ্তরের ট্রেনিং সেন্টারে প্রায় ৬ মাস ধরে থাকেনে বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের নৈশপ্রহরী মো. ফজলু।

নিয়ম অনুযায়ী তাদের প্রত্যককে ৪ হাজার ৫০০ টাকা করে মাসিক ভাড়া পরিশোধ করার কথা। কিন্তু তারা তা করেননি। বিনা ভাড়ায় সেখানে থাকেন। এতে করে সরকার প্রায় ৩ লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নৈশপ্রহরী মো. মোতালেব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ায় ইউএনও স্যার তাকে বসবাস করতে দিয়েছেন। তবে ডিসেম্বরে তিনি চলে যাবেন। তবে এনিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসারের গাড়িচালক মো. সেলিম রেজা’ এই বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সরকারি বাসা বরাদ্দ কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম শফিক বাংলানিউজকে বলেন, বাসা ভাড়া পরিশোধের জন্য তাদের কয়েকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। পরে ভাড়া পরিশোধ না করায় বাসা ছাড়ার নোটিশও দেওয়া হয়েছে। তাতেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানদের এ বিষয়ে তাগিদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এরপরেও যদি তারা ভাড়া পরিশোধ না করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ এতে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।

সিংড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি অবগত আছেন। এছাড়া অনেক আগেই তাদের বাসা ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। পুনরায় তাদের নোটিশ দেওয়া হবে। তাতে সাড়া না পেলে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।