ঢাকা, শনিবার, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জ্যাম-জেলি হবে ভিমরুলি-আটঘর-কুড়িয়ানার পেয়ারায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১
জ্যাম-জেলি হবে ভিমরুলি-আটঘর-কুড়িয়ানার পেয়ারায়

বরিশাল: কৃষি পণ্য দিয়ে বিভিন্ন খাদ্য প্রস্তুত বিষয়ে প্রশিক্ষণ স্বপ্ন দেখাচ্ছে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ ও ঝালকাঠী জেলা সদরের ফল চাষিদের।

স্থানীয় উৎপাদিত ফল পেয়ারা ও আমড়া দিয়ে জ্যাম, জেলি ও আচার তৈরি শেখাতে দুই দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।

পিরোজপুর জেলার নেছারবাদ উপজেলার আটঘর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় রহমতপুরে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ‘এগ্রিকালচার প্রোডাক্টস প্রসেসিং ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর বিএআরআইয়ের পরিচালক ড. মুহাম্মদ সামসুল আলম। এশিয়ান ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার ইনিশিয়াটিভ আরডিএ কোরিয়ার অর্থায়নে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে বরিশাল, ঝালকাঠী ও পিরোজপুর অঞ্চলের ৬০ জন পেয়ারা, আমড়া চাষি ও কৃষানি অংশ নেন।

প্রকল্পের পিআই ড. মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন মোল্লা বলেন, প্রক্রিয়াজাতকরণের এ প্রশিক্ষণটি শুধু কৃষক গ্রুপের আর্থ-সামাজিক অবস্থারই পরিবর্তন করবেনা, কেমিক্যালমুক্ত নিরাপদ ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার প্রক্রিয়াজাত করতেও সাহায্য করবে।

তিনি বলেন, বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভিমরুলিতে, পিরোজপুরের আটঘর- কুড়িয়ানা ও বরিশালের বানারীপাড়ায় পঁচিশ হাজার মেট্রিক টনের বেশি পেয়ারা উৎপাদন হলেও এর একটি অংশ সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। পেয়ারা থেকে জ্যাম জেলি তৈরি শুরু হলে এসব ফল আর নষ্ট হবে না। যা এ অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে। তাছাড়া স্থানীয় পুষ্টি ঘাটতি মোকাবিলায় কেমিক্যাল মুক্ত, ন্যাচারাল এ প্রডাক্ট বিরাট পরিবর্তন আনতে পারে।

অনুষ্ঠানে বরিশালের রহমতপুরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রফি উদ্দিন জানান, এ অঞ্চলের কৃষকরা যেন ভবিষ্যতেও কৃষি পণ্য তৈরি করতে পারে সেজন্য এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

কৃষি পণ্য উদ্যোক্তা ড. তালুকদার হুমায়ুন হাতে কলমে জ্যাম জেলি ও আমড়ার আচার তৈরি বিষয়ে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দেন।

প্রশিক্ষণ নিতে আসা আফরোজা ও তানজিলা জানান, জ্যাম, জেলি তৈরি শিখে বাজারে বিক্রি করতে পারলে তাদের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হবে।

বিজয় বেপারী নামে এক আমড়া চাষি জানান, এখানে ফল সংরক্ষণের বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যা ফল সংরক্ষণ কাজে সহায়তা করবে।

এ ধরনের প্রশিক্ষণ কৃষি ভিত্তিক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে বলে জানান, বরিশাল বিজনেস ইউইমেন ফোরামের সভাপতি ড. বনলতা মুরশিদা।

বরিশাল চেম্বার ও কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, এ প্রশিক্ষণ নারীদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়াতে সহায়তা করবে।

পিরোজপুর আমড়া ও পেয়ারা চাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি নিত্যানন্দ সমদ্দার জানান, আমরা এ প্রশিক্ষণকে স্বাগত জানাই, প্রশিক্ষণের কারণে এ অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক পণ্য পেয়ারা ও আমড়া দিয়ে খাদ্য তৈরি শুরু হলে দুটি ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুরের পোস্ট হারভেস্ট বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাফিজুল হক জানান, কৃষকরা কষ্ট করে ফসল ফলিয়ে অনেক সময় ভালো দাম পায় না। যা তাদের হতাশ করে। এ উদ্যেগের ফলে কৃষকরা পণ্যের সঠিক দাম পেতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১
এমএস/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।