ঢাকা: উত্তরাঞ্চলের মানুষের রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগে বঙ্গবন্ধু সেতুর বিকল্প হিসেবে যমুনা সেতুতে কর্ণফুলীর আদলে একটি টানেল নির্মাণের জন্য সমীক্ষা কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।
উত্তরাঞ্চলের মানুষের ঢাকায় আসার ক্ষেত্রে সড়কে যানজটে অনেক ভোগান্তি হয়, যমুনা নদীতে গাইবান্ধা বালাসী ঘাট চালু করা সম্ভব কিনা? ঘাট চালু না করা গেলে যমুনায় আরেকটি সেতু করার পরিকল্পনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা জন্মের পর থেকেই এ রুট (বালাসী ঘাট ও জামালপুরের বাহাদুরাবাদ ঘাট) ব্যবহার করছি। বিকল্প ছিল নগরবাড়ি-আরিচা। এটা (বালাসী ঘাট ও বাহাদুরাবাদ ঘাট) বন্ধ হয়ে গেছে।
উত্তরাঞ্চলের সন্তান নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুর বিকল্প একটি সেতুর প্রয়োজন আছে। দ্বিতীয় একটি টানেলের সমীক্ষা কার্যক্রম চলছে। সেটার যদি সঠিক ফলাফল আসে তাহলে ভবিষ্যতে সেখানে একটি টানেল নির্মাণ করা হবে। এ ধরনের একটি চিন্তা-ভাবনার কথা আমরা জেনেছি। এটি বাস্তবায়িত হলে কর্ণফুলীর পর দেশে দ্বিতীয় টানেল হবে যমুনায়।
নদীর তলদেশে দেশের প্রথম টানেল নির্মিত হচ্ছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে। চীনের সাংহাই শহরের আদলে বন্দরনগর চট্টগ্রাম শহরকে ‘ওয়ান সিটি, টু টাউন’ মডেলে গড়ে তুলতে পতেঙ্গা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারার মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টানেল নির্মাণ করছে সরকার। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। দুই টিউবের এ টানেল নির্মাণকাজ শেষ হলে চার লেন দিয়ে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচল করতে পারবে।
যমুনা নদীকে ঘিরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য আরেকটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যমুনা নদী অর্থনৈতিক করিডোর। এ নদীতেও তিস্তার মতো প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ভাঙনের হাত থেকে জমি রক্ষা করা এবং নদীর পানিকে ব্যবহার করে কৃষি অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা হবে।
খালিদ মাহমুদ বলেন, তিস্তা নদীকে ঘিরে অনেকগুলো শাখা নদী। এ নদীগুলোকে ঘিরে আমাদের পরিকল্পনায় আছে। প্রতিবছর বন্যার সময় তিস্তা নদী ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙনরোধ করার জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে আসা হবে। নদীর পানি ধরে রেখে কাজে লাগানোর জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
তিস্তা নদী ঘিরে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী জানান, এটা নিয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবনায় আছে, চীন সরকার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর বাইরেও অনেকগুলো দেশ বিশেষ করে ইউরোপীয় দেশ এবং ভারত আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সেগুলো পর্যালোচনা চলছে।
বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক। এসময় বিসএসআরএফের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
এমআইএইচ/ওএইচ/