ঢাকা, সোমবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে রোগীর মৃত্যু নিয়ে নিরাপত্তাকর্মী-স্বজনদের সংঘর্ষ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
সিলেটে রোগীর মৃত্যু নিয়ে নিরাপত্তাকর্মী-স্বজনদের সংঘর্ষ সিলেটে রোগীর মৃত্যু নিয়ে নিরাপত্তাকর্মী-স্বজনদের সংঘর্ষ

সিলেট: সিলেটে রাগিব রাবেয়া মেডিক্যালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু ও আইসিইউতে রেখে দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ করেছেন স্বজনরা। এ সময় হাসপাতালের নিরাপত্তা প্রহরী ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে নগরের তারাপুর রাগিব রাবেয়া মেডিক্যালে ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।  

এ সময় হাসপাতালের একটি অ্যাম্বুলেন্স ও আইসিইউ কক্ষের গ্লাস ভেঙে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তারক্ষীরা স্বজনদের ওপর হামলা করেন। তাদের লাঠিপেটায় কয়েকজন আহত হয়েছেন।  

রোগীর স্বজনরা জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর ফুলজান বেগমকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর গত রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে রোগীর শরীর থেকে টিউমার অপসারণে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার শেষে ওইদিন বিকেল সোয়া ৫টার দিকে রোগীকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে আইসিইউতে রাখা হয়। কিন্তু অস্ত্রোপচারকালে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার কারণে আর জ্ঞান ফিরে আসেনি। বুধবার রোগীকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

নিহতের ছেলে সামাদ রহমানের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসায় তিনদিন আগেই তার মা মারা গেছেন। এরপরও অতিরিক্ত বিল আদায়ে সংশ্লিষ্টরা মরদেহ আইসিইউতে রেখে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ তোলেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে নিরাপত্তাকর্মীরা রোগীর স্বজনদের ওপর হামলা করে তাদের রক্তাক্ত জখম করেন।

এদিকে, একইদিনে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিরগাঁওয়ের আরেক রোগী করোনা ইউনিটে মারা যান। তবে রোগীর স্বজনরা ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, উভয় ঘটনায় স্বজনরা বিক্ষোভ করে ভাঙচুর শুরু করলে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে রোগীর স্বজনদের কয়েকজন আহত হয়েছেন।

হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. তারেক আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, উভয় মৃত্যুর ঘটনা প্রায় একই সময়ে ঘটনায় স্বজনরা হুলুস্থুল শুরু করেন। করোনায় মারা যাওয়া রোগীর স্বজনরা তখন মরদেহ নিয়ে বেরোনোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাদের কোনো অভিযোগও ছিল না। কিন্তু ফুলজান বেগমের মারা যাওয়ার ঘটনায় তার স্বজনরা হুলুস্থুল শুরু করলে ওই রোগীর স্বজনরাও ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, রোগীর বয়স বেশি। যে কারণে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে আর জ্ঞান ফিরেনি। বিষয়টি সাধারণত খুব কম রোগীর বেলায় ঘটে থাকে। যেমনটি ঘটেছে ফুলজান বেগমের বেলায়। কিন্তু স্বজনদের বুঝানোর পরও তারা স্টাফদের মারধর ও ভাঙচুর করেছেন।

রোগীর স্বজনদের রক্তাক্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন, রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকদের ওপর আঘাত করতে গেলে নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দেন। তারা ইচ্ছা করে কাউকে আঘাত করেনিন। কেননা, শুরু থেকেই এখানে পুলিশ ছিল।         

এসএমপির জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান বলেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে ওই নারীর মৃত্যু ও অস্ত্রোপচারে আরেক নারীর মৃত্যু নিয়ে স্বজনরা অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
এনইউ/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।