ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মহা ধুমধামে বিয়ে হলো ৩ ফুট উচ্চতার বর-কনের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১
মহা ধুমধামে বিয়ে হলো ৩ ফুট উচ্চতার বর-কনের বর বরিউল ও কনে ময়না।

যশোর: যশোরে মহা ধুমধামে তিন ফুট উচ্চতার বর ও কনের বিয়ে দিয়েছেন এলাকাবাসী। কনে যশোরের সদর উপজেলার আন্দুলিয়া গ্রামের নাজির মোল্লার মেয়ে ময়না খাতুন।

বর একই উপজেলার নরেন্দ্রপুর পোস্ট অফিস এলাকার মৃত আকবার আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম। দুজনেরই শারীরিক বিকাশ স্বাভাবিক নয়।  

বর-কনে ও তাদের অভিভাবকদের সম্মতিতে দুপুরে এ বিয়ের আয়োজন করেন স্থানীয়রা। তিন ফুট উচ্চতার বর-কনের বিয়ের খবরে আশপাশের গ্রাম থেকে হাজারো লোক ছুটে আসেন এই নবদম্পতিকে একনজর দেখার জন্য। এলাকাবাসীর এই প্রশংসনীয় উদ্যোগে খুশি নবদম্পতি।

সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য সুজিত বিশ্বাস বলেন, বর রবিউল ইসলামের বয়স ২৬ বছর হলেও তার উচ্চতা তিন ফুট। আর ৩৬ বছর বয়সী কনে ময়না খাতুনের উচ্চতাও তিন ফুট।  

এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় বিয়ের গেট সাজিয়ে, প্যান্ডেল নির্মাণ করে ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিয়েতে দুইটি মাইক্রোবাসসহ ২০টি মোটরসাইকেলে ৬০ জন বরযাত্রী এসেছিলো। মুসলিম শরিয়াহ অনুযায়ী সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে এক হাজার এক টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।  
বরের খালু জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বর রবিউলের জন্ম খুবই দরিদ্র পরিবারে। ছোট্টবেলা থেকে তার বাবা-মা কেউ নেই। ছোট্ট থেকে আমরাই রবিউলকে মানুষ করেছি। কৃষিকাজ করেই সে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। রবিউলের বিয়ের বয়স হলেও অনেকদিন ধরে বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অবশেষে পাশের আন্দুলিয়া গ্রামে একটি মেয়ে খুঁজে পাই। জানতে পারি ওই গ্রামের নাজির মোল্লার মেয়েও কম উচ্চতার। স্থানীয় ব্যক্তিদের সার্বিক সহযোগিতায় তাদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিয়ের পরে নতুন বর-বউকে দেখতে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোকজন আসছে। সেইসঙ্গে তাদের জন্য দোয়াও করছেন দেখতে আসা বিভিন্ন শ্রেণীর এসব মানুষ।
  
বর রবিউল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, দুজনের সম্মতিতেই আমাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়ে করতে পেরে অনেক আনন্দ লাগছে। দেশবাসির কাছে এই দম্পতি দোয়া চেয়েছেন।  

কনে ময়না স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে বলেন, আমাদের বিয়ে খুব ধুমধামে হয়েছে। অনেক ভালো লাগছে। এভাবে বিয়ে হবে কখনো স্বপ্নও দেখেনি। বিয়েতে আসা দুপক্ষ অনেক আনন্দ করেছে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন সবাই।  

বিয়ের অন্যতম আয়োজক স্থানীয় গাজী কামারুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই সহযোগিতা করে ওদের বিয়ে দিয়েছি। সবাই দোয়া করবেন ওদের জন্য। কম উচ্চতার মানুষকেও সমাজের মূল স্রোতে আনতে এভাবেই এলাকাবাসী ও পরিবার স্বজনদের এগিয়ে আসতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১
ইউজি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।