হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার রোপা আমনের মৌসুমে সারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সারের মূল্য বেড়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
সরকার অনেক কৃষককে বিনামূল্যে সার দিচ্ছে। দেশজুড়ে সারের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে চলছে তৎপরতা। কিন্তু লাখাইয়ে সারের মূল্যবৃদ্ধিরোধে কর্তৃপক্ষের নিরব ভূমিকা ভাল চোখে দেখছেন না স্থানীয়রা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে ইউরিয়া সারের ৫০ কেজির এক বস্তা ৮শ’, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) প্রতি বস্তা ১ হাজার ১শ’ ও মিউরেট অব পটাশ অর্থাৎ এমওপি সারের প্রতি বস্তা ৭শ’৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কিন্তু রোপা আমনে লাখাই উপজেলায় ৩ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪ হাজার হেক্টর চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এজন্য বেড়ে গেছে সবধরণের সারের চাহিদা। অভিযোগ উঠেছে চাহিদা বাড়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সারের ডিলাররা অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছেন।
উপজেলাটির বুল্লা বাজার, বামৈ বাজার, লাখাই বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে সার বিক্রিতে অতিরিক্ত মূল্য নেয়ার কথা জানা গেছে।
আব্দুল হামিদ, ফরিদ মিয়া চৌধুরী, শাহ আলম ও রেজু মিয়াসহ কয়েকজন কৃষক জানান, অনেক ডিলার ইউরিয়া সার ৮শ’ টাকার পরিবর্তে ১ হাজার, টিএসপি ১ হাজার ১শ’ টাকার পরিবর্তে ১ হাজার ৩শ’৫০ টাকা ও ৭শ’৫০ টাকার পরিবর্তে এমওপি সারের মূল্য নিচ্ছেন ১ হাজার টাকা।
কৃষকরা আরও জানান, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএডিসি) সারের মজুদ চাহিদা অনুযায়ী না থাকায় ডিলাররা কৃষকদের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছেন। অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সার ক্রয় করছেন। সারের মূল্য বেশি হওয়ায় সকল খরচ যোগ করে এবার আমনে বেশি লাভবান হতে পারবেন না বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের সাবেক কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ বীরেন্দ্র লাল সাহা বলেন, কৃষকরা দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। সারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে যদি তাঁদেরকে লোকসান গুণতে হয় তাহলে সেটি আমাদের চরম ব্যর্থতা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জোরদার তৎপরতা চালাতে হবে।
লাখাই উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার জানান, বরাদ্দ অপ্রতুল থাকায় চাহিদা অনুযায়ী ডিলারদের সার দেওয়া যাচ্ছে না। তবে মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে বাজার পর্যবেক্ষণ জোরদার করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১
এনএইচআর