লক্ষ্মীপুর: কমলনগরের চর ফলকন ইউনিয়নের লুধায়া বাজার সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন পান্না বেগম। তার স্বামী শাহাবুদ্দিন নদীতে মাছ শিকারে নিয়োজিত।
নদীর ঠিক তীর সংলগ্ন একটি ঝুপড়ি ঘরে ভাত রান্নায় ব্যস্ত পান্না। ঘরের পেছনেই মেঘনা তার অব্যাহত ভাঙনের খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। যেভাবে ভাঙছে মেঘনা, তাতে এখানে হয়তো দুই বা তিন দিন থাকতে পারবেন তারা। এরপর পান্না বেগম স্বামী সন্তান নিয়ে যাবেন কোথায়? এমন প্রশ্নে পান্নার ছয়-সাত বছরের ছেলে কাছে এসে নদী থেকে দূরের একটি খালি ভিটা দেখিয়ে বলে, পাশের এ বাড়িতে আমরা থাকতে চেয়েছি। তারা থাকতে দেয়নি।
পান্না বলেন, এখান থেকে প্রায় এক মাইল দূরে আমাদের বসতবাড়ি ছিল। দুই বছর আগে নদীতে ভেঙে গেছে। বেড়িবাঁধের পাশে ঘর তৈরি করে থেকেছি। সেটিও এক বছর আগে নদীতে চলে গেছে। লুধুয়া মিয়াগো বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। ছয় মাস আগে সেটি ভাঙছে। কোথায় যাব? যাবার আর জায়গা নেই। দেড় মাস থেকে নদীর কিনারায় থাকতেছি। স্বামী নদীতে মাছ শিকার করে, জমি কেনার মতো অবস্থা নাই আমাদের।
সর্বগ্রাসী মেঘনা পান্নার পরিবারের মতো এরকম অসংখ্য পরিবারকে ভিটেছাড়া করেছে। গত প্রায় ৩০ বছরের ব্যবধানে মেঘনার ভাঙনে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর এবং রামগতি উপজেলার প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছে। দিন দিন বাড়ছে গৃহহারা মানুষের সংখ্যা। যাদের সামর্থ্য আছে তারা জমি কিনে বাড়ি করছেন। আর সামর্থ্যহীনরা রাস্তা বা বেড়িবাঁধের পাশে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য সরকার কাজ করছে। এছাড়া মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের সরকার জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে ভাঙন কবলিতদের ত্রাণ সহায়তা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১
আরএ