মাদারীপুর: বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে দীর্ঘ ৩৪ দিনেও ফেরি চালু না হওয়ায় দুর্ভোগে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা। গত ১৮ আগস্ট থেকে স্রোতের তীব্রতার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে বন্ধ রাখা হয়েছে ফেরি চলাচল।
শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা যায়, নৌরুটে স্রোতের তীব্রতার কারণে ফেরি চলাচল হুমকিতে পড়ে। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য গত আগস্ট মাসের ১৮ তারিখ দুপুর থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানে পদ্মায় পানি কমলেও স্রোত না কমায় ফেরি চালু হয়নি। ফেরি বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করে পণ্যবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করছে। বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে চারটি রো রো ফেরিসহ মোট ১৬-১৮ টি ফেরি চলাচল করতো। ফেরি চলাচল বন্ধ হবার কয়েকদিন আগে আরো দুটি নতুন ফেরি যুক্ত করা হয়েছিল এ নৌরুটে।
ঢাকা থেকে লঞ্চে পার হয়ে আসা যাত্রীরা বাংলানিউজকে বলেন, ফেরি বন্ধ থাকায় জরুরি যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। রোগী নিয়ে ঢাকা যেতে দীর্ঘপথ ঘুরে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া হয়ে যেতে হচ্ছে। যা সত্যিকার অর্থেই এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বড় ভোগান্তি।
বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা যায়, গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় বাংলাবাজার ঘাটে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ঘাটের ফেরিগুলো অন্য রুটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চারটি ফেরিঘাটে এখন সুনসান নিরবতা। শুধু লঞ্চ চালু থাকায় ঘাট এখনো টিকে আছে। ফেরি ঘাটের হোটেল, চায়ের দোকানসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখে বিকল্প কাজ করছেন। কেউ লঞ্চ ঘাটে ভাসমান ভাবে দোকান করছেন।
বরিশাল থেকে আসা যাত্রী মারিয়া আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, সন্ধ্যায় লঞ্চ বন্ধ হয়ে যায়। অনেক সময় ঢাকা থেকে ফিরতে ঘাটে আসতেই সন্ধ্যা হলে ফেরিতে পার হওয়া যেতো। এখন উভয় দিকেই সংকট তৈরি হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার আগে যে করেই হোক ঘাটে পৌঁছানোর তাড়া থাকে।
বিআইডব্লিউটিএ'র শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানায়, পদ্মায় স্রোতের মাত্রা কমে এলেই ফেরি চলাচল শুরু করবে। সার্বক্ষণিক নৌরুটে মনিটরিং করা হচ্ছে। নদীর পানি কমলেও স্রোত আশানুরূপ কমেনি।
এদিকে বিআইডব্লিউটিসি'র বাংলাবাজার ঘাটের একটি সূত্র জানায়, অক্টোবরের ৩-৪ তারিখের দিকে ফেরি চালু হওবার একটি সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে ১ তারিখেই চালু হবার কথা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু আপাতত তেমন কোন আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলেই নৌরুটে ফেরি চালু হবে।
লঞ্চে পার হওয়া একাধিক যাত্রী বাংলানিউজকে জানান, পদ্মায় পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে স্রোত কমেছে। আগের মতো প্রচণ্ড স্রোত এখন নেই। তারপরও ফেরি কেন চালু হচ্ছে না তা বোধগম্য নয়।
বিআইডব্লিউটিএ'র মেরিন কর্মকর্তা (শিমুলিয়া) আহমদ আলী বলেন, এখনো ফেরি চালু হওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পদ্মায় স্রোত এখনো রয়েছে। ফেরি চালুর বিষয়ে নতুন কোনো সংবাদ দেওয়া যাচ্ছে না। '
বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, স্রোত না কমলে ফেরি চালানো যাচ্ছে না। এখনো আগের সিদ্ধান্তই রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১
এনটি