ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীর নদী রক্ষায় ১৩ দফা সুপারিশ বাদশার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১
রাজশাহীর নদী রক্ষায় ১৩ দফা সুপারিশ বাদশার

রাজশাহী: রাজশাহী অঞ্চলের নদ-নদী ও খাল-বিল রক্ষায় সরকারের কাছে ১৩টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী জেলা ও মহানগর কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি এই সুপারিশগুলো তুলে ধরেন।

 

এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান বাদশা।

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর সীমান্ত অবকাশ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা। রাজশাহী অঞ্চলের নদী গবেষক সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মাহবুব সিদ্দিকী সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি তার প্রবন্ধে ওয়ার্কার্স পাটির নেতা ফজলে হোসেন বাদশার ১৩ দফা সুপারিশের বিস্তারিত বিষয়গুলো তুলে ধরেন এবং বর্ণনা করেন।

এগুলো হলো- অনতিবিলম্বে সরকারি-বেসরকারি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পদ্মা ও এর শাখা নদীগুলোকে উদ্ধার করা, পদ্মা নদীর বালু উত্তোলনে নীতিমালা প্রণয়ন এবং নদীতীর থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা, রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধের ১৯টি স্লুইস গেট সচল রাখা, শহরের মধ্য দিয়ে একসময় প্রবাহিত হওয়া নদীগুলোকে দখলমুক্ত করে পদ্মার সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করা, শহরের পানি বারনই নদীতে পতিত হওয়ার সব বাধা দূর করা, ১৮৯৭ সালে খনন করা ‘নারদ’ নদ ও ‘বৈরাগী’ পুনরায় সংষ্কার করে পদ্মার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা।

এছাড়া সুপারিশের মধ্যে আছে, পবার হরিপুর ও দামকুড়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত চিনারকুপ নদীকে পুনরায় খনন করে আগের মতো পদ্মার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন, শহরের তরল বর্জ্যকে পরিশোধন করে বারনই নদীতে প্রবেশের ব্যবস্থা করা ও ভুগরইলবিল ও মতিয়ার বিলে তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ করা, নদীর প্রতি বৈরি আচরণের জন্য যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা, পদ্মার মূল প্রবাহে সারাবছর পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করা, ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘ কতৃক প্রণীত আন্তর্জাতিক পানি বিষয়ক সনদে সই করা এবং পদ্মায় শুষ্ক ও ভরা মৌসুমে প্রতিদিন কী পরিমাণ পানি প্রবাহিত হয় তার হিসাব জনসম্মুখে তুলে ধরা।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, পদ্মা নদীতে সকল সরকারি-বেসরকারি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। নদীতে বালু উত্তোলন নিয়ে রাজশাহীতে অনেক কথা উঠেছে। সরকার বালু উত্তোলনকে বাণিজ্যিকভাবে দেখাতে চায়, কিন্তু বালু উত্তোলন যেভাবে করা হয়; সেটি দেশের স্বার্থবিরোধী কাজ এবং অবৈধ। নদীর তীর থেকে বালু উত্তোলন করা হয়, কিন্তু বালু উত্তোলনের মূল জায়গা হচ্ছে নদী মূল স্রোতের কেন্দ্রীয় স্থল। এটি রাষ্ট্রের একটি আইন। কিন্তু সেই আইন বাস্তবে পুরোপুরি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থ অপরাজনীতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও সভায় মন্তব্য করেন ফজলে হোসেন বাদশা।

বাদশা বলেন, এখানে বারনই নদী নিয়ে কথা এসেছে। বারনই নদীকে সরকারি সিদ্ধান্তে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বারনই নদীতে যে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে সেটি ভেঙে ফেলতে হবে এবং নদী প্রবাহকে স্থিতিশীল করার জন্য ও সেটিকে নদী হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য কাজ করতে হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগর সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু। মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু সভা পরিচালনা করেন।  

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নগর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১
এসএস/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।