নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে কামাল হোসেন নামে এক মোটর পার্টস ব্যবসায়ীর টিআইএন (ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন) নম্বর দিয়ে চার জেলায় প্রতারকরা ১১টি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করেছেন।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ফতুল্লার চাঁনমারী এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ কর অঞ্চলে কামাল হোসেনকে ডেকে ওই গাড়িগুলোর কর দাখিলের অনুরোধ করা হয়।
কামাল হোসেন সোনারগাঁ উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের মৃত. আহাদ আলীর ছেলে। তিনি সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় সাদিয়া এন্টারপ্রাইজ নামে একটি মোটর পার্টস বিক্রয় প্রতিষ্ঠান দিয়ে ব্যবসা করেন। তার টিআইএন নম্বর হচ্ছে ৩২৪২২৩৭৬০৩৫০/সা-১৬ (সোনারগাঁও) কর অঞ্চল নারায়ণগঞ্জ।
কামাল হোসেন বলেন, যশোর ও টাঙ্গাইল জেলার রেজিস্ট্রেশনে আমার দু’টি মিনিবাস ছিল। ৪/৫ বছর আগে দু’টি গাড়িই বিক্রি করে দিয়েছি। এখন আমার কোনো গাড়ি নেই। বুধবার নারায়ণগঞ্জ আয়কর অফিসে আমাকে ডেকে এনে আমার বিক্রি করা দু’টি গাড়িসহ মোট ১৩টি গাড়ির কর দাখিলের অনুরোধ করে। এতে আমি অবাক হই। এতো গাড়ির মালিক কখনো হতে পারবো না। কিন্তু বাস্তবে ৪টি ট্রাক, ১টি ট্যাংক লরি, ৪টি মিনি বাস ও ৪টি প্রাইভেটকারের মালিক বনে আছি। এটা আমার কাছে আসলেই আলাদিনের চেরাগের মত বিষয়। আমি গাড়িগুলোর রেজিস্ট্রেশন নম্বর সংগ্রহ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি রতন কান্তি ধরের শরনাপন্ন হলাম। তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি এখন আইনগতভাবে প্রতারকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
তিনি আরও বলেন, প্রতারকরা আমার টিআইএন নম্বর দিয়ে যে ১১টি গাড়ি রেজিস্ট্রেশন করেছে তা হলো- ট্রাক কুমিল্লা-ট ০৯-০০০১, ঢাকা মেট্রো-ট ১৪-২৪৬৫, ঢাকা মেট্রো-ট ১৬-৩০০০, নারায়ণগঞ্জ-ট ১১-৩২০১, ট্যাংকলরি ঢাকা মেট্রো ইউ ১১-২৬১৩, মিনিবাস গাজিপুর-জ ০৪-০৪৩৪, ঢাকা-জ ১৪-০১৮০, প্রাইভেটকার ঢাকা মেট্রো-গ ১২-৭১৮৯, ঢাকা মেট্রো-গ ২৫-৫৯৩০, ঢাকা মেট্রো-গ ২৫-৮২৬৭, ঢাকা মেট্রো-গ ৩৭-৭৫১৯।
তিনি বলেন, যশোর-জ ১১-০১৮১ ও টাঙ্গাইল-জ ১১-০১৩০ রেজিস্ট্রেশন নামে আমার দু’টি মিনিবাস ছিল। সেগুলো বিক্রি করে দিয়েছি। কর অঞ্চল থেকে আমার বিক্রি করা দু’টি গাড়িসহ ১৩টি গাড়ির কর দাখিলের অনুরোধ করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ কর অঞ্চল থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছিক এক কর্মকর্তা বলেন, যদি কামাল হোসেনের নামে ১৩টি গাড়ি না থাকে, তাহলে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে কর অফিসে এলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রতন কান্তি ধর বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রতারক বা বিআরটিএ এর দালালরা কামাল হোসেনের টিআইএন ব্যবহার করে ৪টি জেলায় বিভিন্ন যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন করেছে। আয় বা ব্যবসা করতে হলে নিজ নামে টিআইএন লাগবে। অন্যের টিআইএন ব্যবহার করে ব্যবসা করলে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কামাল হোসেনকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২১
এমআরএ